প্রথম ব্যর্থ হলাম; তুমি খুব শক্ত মানুষ

14
প্রথম ব্যর্থ হলাম; তুমি খুব শক্ত মানুষ

তখন ভার্সিটিতে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। একবার আমার এক ব্যাচমেট বললো- দোস্ত ঢাকায় ঘুরতে চল। তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
আমি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বললাম- আমার তো শিডিউল থাকে অন্য এক দিন যাব।
সেদিনের জন্য রেহাই পেলেও কয়েকদিন পর থেকে আবার নাছোড়বান্দার মতো ঢাকা যাওয়ার অফার করতে লাগল। এই সেই বলে বলে কয়েকদিন ঘুরালাম। কিন্তু ক’দিন ঘুরানো যায় একটা লোককে? ব্যাচমেট, আবার সম্পর্কও খারাপ না। অবশেষে একদিন রাজি হই।
দুপুরের বাসে ওর সাথে পান্থপথে যাই। যেয়ে দেখি একটা সেমিনার। এমনিতেই সেমিনারে আমার কিছুটা বিরক্তি আছে। তার ওপরে এমএলএম কোম্পানির আয়োজনে। সম্ভবত “বিজনাস ডটকম” টাইপের কিছু একটা নাম।
প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে সেমিনার শেষ করলাম। আমার যতদূর মনে পরে একবারও সেমিনারের বক্তা বা পেজেন্টেশানের দিকে তাকাইনি। আমার হাতে একটা বই ছিল, সেটাই শেষ করেছি।
সেমিনার শেষে কিছু পেপার ধরিয়ে দিয়ে আমার ব্যাচমেট বন্ধু বলল- তাহলে সাইন করে ফেল।
– বললাম কিসে?
– পেপারে সাইন করে জয়েন করে ফেল। বাকিটা আমি দেখছি।
আমি বললাম, আপাতত চিন্তা নেই। পরে দেখি করা যায়…
নিরাশ বন্ধু বললো- ভুল করিস না দোস্ত পরে পস্তাবি…ইত্যাদি ইত্যাদি..
এরপর সন্ধ্যার বাসে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলো। বললো- তোর বন্ধুর শিগগিরই গাড়ি, বাড়ি হয়ে যাবে। তখন কিন্তু ঠিক পস্তাবি..
বললাম- আমি বেড়াতে যাব তোর বাড়িতে..
বলল- ফাইজলামি করিস না, সিরিয়াসলি একটু ভেবে দেখ… বাড়ি -গাড়ি তোর হলে কেমন লাগবে?
বললাম- আমার বাড়ি গাড়ির কোনো লোভ নেই
এরকম হাজারো কথা, পাল্টা কথার মধ্য দিয়ে দেড়/২ ঘণ্টা পর ক্যাম্পাসে বাস চলে এলো। আমি কবির স্মরণিতে এসে নেমে গেলাম।
নামার সময় বলল- পল্লব, এই প্রথম আমি ব্যর্থ হলাম; তুমি খুব শক্ত মানুষ..
আমি মুচকি হেসে হলের দিকে পা বাড়ালাম।