সাভারে
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকালে চাকলাদার মহিলা কলেজের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী আশুলিয়ার জিরাব থেকে কলেজে যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রীবাহী বাসে রওনা হয়। পথে বিশমাইলে কলেজের অধ্যক্ষ আফতাব উদ্দিন ওই বাসে ওঠেন। তিনি ওই ছাত্রীর পাশের সিটে বসেন।
ওই ছাত্রী জানান, স্যারকে দেখে আমি তাকে পাশে বসতে দিই। এক পর্যায়ে আমি বেতন মওকুফের বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলি। স্যার বলেন, তোমার বেতন মওকুফ করে দেব। এ বলেই ওড়নার নিচ দিয়ে শরীরে হাত দেয়। মানা করলেও তিনি তা মানেননি। লজ্জা ও ভয়ে আমি কেঁদে ফেলি।
ওই বাসের যাত্রী ও এনাম মেডিকেল কলেজের ছাত্র সুমন জানান, লোকটি ছাত্রীর শরীরে হাত দিলে আমরা পেছনের সিট থেকে তা দেখতে পারি। মেয়েটি ইতস্ততবোধ করলেও লোকটি বিশেষ স্থানে হাত দেয়, জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে। মেয়েটি কাঁদতে শুরু করলে যাত্রীরা বাস থামিয়ে লোকটিকে নামিয়ে গণপিটুনি দেয়। পরে জানা যায়, লোকটি ওই ছাত্রীর কলেজেরই অধ্যক্ষ।
সেখান থেকে সাভার মডেল থানার এসআই শংকর ছাত্রী ও অধ্যক্ষকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ছাত্রীর মা থানায় এসে এর তীব্র প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেন। ছাত্রীর সহপাঠীরাও তাকে সান্ত্বনা দেন। প্রিন্সিপালের বিচার ও তাকে অপসারণের দাবি জানান।
ছাত্রীর মা বলেন, তারা খুবই দরিদ্র ও অসহায় পরিবার। গার্মেন্টে চাকরি করে অনেক কষ্টে করে মেয়ের লেখাপড়া চালান। তিনি বলেন, এ ঘটনার পর তার মেয়ের ভবিষ্যৎ ও লেখাপড়া নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে।
সাভারের সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান জানান, কলেজ কমিটি ছাত্রীর লেখাপড়ার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেবে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও সাভার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল গনি জানান, আফতাব উদ্দিনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ১৯ মার্চ গভর্নিং বডির মিটিং ডাকা হয়েছে।
আফতাব উদ্দিন বলেন, অজান্তেই ভুল করে ফেলেছি। আমি সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। তিন কন্যার জনক ৬০ বছর বয়সী এ শিক্ষকের স্ত্রী দুই বছর আগে ইন্তেকাল করেন।
সাভার থানা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শফিকুর রহমান জানান, শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রিন্সিপালকে আটক করা হয়েছে। ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যুগান্তর