বই খুলে পরীক্ষা দিতে দিলেই নকল কমবে!

ভারতের বিহারের মাধ্যমিক শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় নকলবাজদের কাণ্ডকারখানা দেশটির অভ্যান্তরীণ তো বটেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে।

এই ঘটনার খবর গণমাধ্যমে আসার পর প্রদেশ সরকারের সমালোচনা হচ্ছে ব্যাপক। ‘নিরাপত্তাবলয়’ ভেদ করে দেওয়াল বেয়ে পরীক্ষার্থীদের বন্ধু ও অভিভাবকদের ‘নকল সাপ্লাই’ দেওয়ার ছবিও প্রকাশ হয়েছে। রাজ্য সরকার নকল রোধের ব্যাপারে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে। তবে পরীক্ষায় নকল বন্ধ করার এক অভিনব পদ্ধতির কথা বলেছেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব। তার মতে বই খুলে পরীক্ষা দিতে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে।

রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (জেএসডি) প্রধান লালু প্রসাদ যাদব বলেন, ক্ষমতায় থাকলে পরীক্ষার্থীদের বই খুলে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেবেন তিনি। নানা কারণে বারবার আলোচনায় থাকা যাদব বলেন, ‘যদি আমাদের সরকার বিহারে ক্ষমতায় আসে, তবে পরীক্ষার্থীদের বই খুলে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করব। যারা বই পড়বে, শুধু তারাই বই দেখে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে।’

রোববার দেশটির বুক্সার জেলায় প্রত্যন্ত গ্রামে একটি স্কুলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। দেওয়াল বেয়ে অভিভাবকদের তিন-চার তলা ভবনের উঠে ‘নকল সাপ্লাই’ দেওয়ার ছবির প্রসঙ্গে মজা করে লালু প্রসাদ বলেন, ‘ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে টিকটিকি দেওয়াল বেয়ে উঠছে।’

এদিকে লালু প্রসাদের বই খুলে পরীক্ষা চালুর প্রতি সমর্থন করেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা সুশীল কুমার মোদি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের নানা দেশের প্রধান কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ব্যবস্থা চালু আছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থী ভালোভাবে বই পড়বে, তারাই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবেন।

প্রাক্তন এই মুখ্যমন্ত্রী বর্তমান বিহার সরকারের উদ্দেশে বলেন, সরকার বলছে তারা নকল করা রোধ করতে পারবে না। আমি যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম তখন, আমি সব পরীক্ষার্থীর হাতে বই দিয়ে বলেছিলাম, এখান থেকে দেখে দেখে লেখ। আপনি কি ভাবেন তারা তা পারবে? তারা লেখা শুরু করে এবং তিন ঘণ্টা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার সময় দেখা যায় অধিকাংশই ফেল করেছে। এভাবেই নকল বন্ধ করা সম্ভব।

গত মঙ্গলবার শুরু হওয়া বোর্ড পরীক্ষায় প্রায় ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। ইতিমধ্যে নকলের দায়ে বেশ কয়েক শ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া

Scroll to Top