থাইল্যান্ডে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের ৩২টি গণকবরের সন্ধান

22

থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে নৌকায় করে বিদেশ পাড়ি জমানো অভিবাসীদের ৩২টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।

শুক্রবার ওই গণকবরগুলো সন্ধান পাওয়া যায় বলে থাই কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্যাংক পোস্ট, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস, ফাস্ট পোস্টসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে।

থাইল্যান্ডের শঙ্খলা প্রদেশের সাদাও জেলায় ওই গণকবরগুলোর অবস্থান। মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য মানব পাচারকারীরা থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী ওই এলাকা ব্যবহার করে থাকে। নৌকায় করে যাওয়া অভিবাসীদেরে আটকে রাখা পরিত্যাক্ত বেশ কিছু ক্যাম্পও রয়েছে সেখানে। মানব পাচারের জন্য স্থানটি কুখ্যাত হিসেবে পরিচিত।

ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার কর্মী সাতহিত থামসুয়ান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘৩২টি গণকবর ও চারটি মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে। মৃতদেহগুলো ময়নাতদন্ত করার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মৃতদেহগুলো বেশ জীর্ণ। একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে আসা একজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নিকটবর্তী পাদাং বাসার শহরের একটি হাসাপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।’

স্থানীয় ওই হাসপাতালটি ওই লোকটি যে বাংলাদেশি তা নিশ্চিত করেছে। তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। গণকবরগুলো বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে আসা নাগরিকদের বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

সাদাওর এক শীর্ষ কর্মকর্তা ‘ভয়াবহ’ ওই গণকবরের কথা নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী ও বর্ডার পেট্রোল পুলিশ ঘটনাস্থলটি ঘেরাও করে রেখেছে। ফরেনসিক বিভাগের সদস্যদের সেখানে নিয়ে আসা হচ্ছে। এরপর কবরগুলো থেকে মৃতদেহ উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে।’

প্রতি বছর ১০ হাজারের বেশি মিয়ানমার নাগরিক, বিশেষত মুসলিম রোহিঙ্গা, ও বাংলাদেশিকে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের কুখ্যাত ওই মানব পাচার রুট দিয়ে মালয়েশিয়ায় পাচার করা হয়। আবার অনেকে এখানে অস্থায়ী ক্যাম্প গেড়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়।

বাংলাদেশিদের চাকরি দেওয়ার নাম করে সমুদ্রপথে নৌকায় করে বিদেশ পাচার করে একটি চক্র। নির্যাতন ও খাবারের অভাবে অনেকে সমুদ্রে মারা যান। আবার যাওয়ার পথে অনেকে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হয়। বর্তমানে সমুদ্রপথে মানব পাচারের সংখ্যা বেড়েছে।

অন্যদিকে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় রোহিঙ্গারা দেশটির সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে একই পন্থায় মালয়েশিয়ার যাওয়ার ঝুঁকি নিয়ে থাকেন।