মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নির্মিত মদীনার মসজিদে নববীর আদলে দেশের সব উপজেলায় মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। নামাজ আদায় নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করতে, নারীদের নামাজের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে, ইসলামী বিষয়াদি নিয়ে গবেষণার সুযোগ বাড়াতে এবং সর্বোপরি ইসলামী জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, প্রত্যেক উপজেলার জনসংখ্যার উপর ভিত্তি করে প্রতিটি চারতলা মসজিদ ২০ থেকে ৪০ শতক জমির ওপর নির্মাণ করা হবে। প্রথম তলায় থাকবে নারীদের জন্য নামাজের পৃথক স্থান, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় থাকবে পুরুষের নামাজের স্থান, আর একদম উপরের তলায় থাকবে লাইব্রেরি। মসজিদে থাকবে কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, ইসলামী দাওয়াত ও তালিমের জন্য আলাদা জায়গাও।
এসব ছাড়াও প্রতিটি মসজিদ কমপ্লেক্সে থাকবে গবেষণা কক্ষ, ইসলামী সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও শিশু শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা কক্ষ, মেহমানদের আবাসন কক্ষ, ধর্মীয় নিয়ম-কানুন মেনে বিদেশি পর্যটকদের পরিদর্শন ব্যবস্থা ও হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার কক্ষ।
সূত্র জানায়, দেশের মোট ৪৮৮টি উপজেলায় ৫০০টি মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকা। পাঁচটি ধাপে মসজিদগুলো নির্মাণ করা হবে। প্রথম ধাপে চার বছরের মধ্যে ১০০টি মসজিদ নির্মাণ করা হবে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্ম মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করে এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এ সংক্রান্ত প্রকল্প তৈরিতে কাজ করছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রকল্পটির সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করা হবে বলে জানা যায়। তারপর জরুরি ভিত্তিতে প্রকল্পটির অনুমোদন নিয়ে বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।
এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (পরিকল্পনা) সাহাবউদ্দিন খান বলেন, পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলায় এ ধরনের মসজিদ নির্মাণ করা হবে। সে লক্ষ্যে আমরা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে প্রকল্প প্রণয়নের কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী সবসময় এ বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখছেন।
সূত্র জানায়, প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার জন্য প্রকল্পটি চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা বিভাগ) আবদুল্লাহ আল মাসুদ। প্রকল্প প্রণয়ন প্রসঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চাহিদার উপর ভিত্তি করে প্রথম পর্যায়ে ১০০টি উপজেলায় মসজিদ নির্মাণ করা হবে। সে লক্ষ্যে সারা দেশ থেকে মন্ত্রী ও এমপিরা চিঠির মাধ্যমে তাদের চাহিদার কথা ব্যক্ত করছেন। আমরা সবগুলো চিঠিই গুরুত্ব দিয়ে বিচার করছি। তারপর এলাকা নির্বাচন করা হবে।
তিনি বলেন, সৌদি আরবের মদীনার মসজিদে নববীর আদলে সব উপজেলায় এসব মসজিদ নির্মাণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সবাই স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিদের চিঠি বিবেচনা করে বাছাইকৃত উপজেলায় প্রথম ধাপে ১০০টি মসজিদ নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি মসজিদ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় থেকে সাড়ে ছয় কোটি টাকা।