ও আমার বউ না, ওকে আমি বিয়ে করিনি। আমার চাকরির ক্ষতি করার জন্য সে আমার পিছনে লেগেছে।’ একথাগুলো নির্যাতিত গৃহবধূ ববিতার স্বামী সেনাসদস্য শফিকুল ইসলামের।
মঙ্গলবার নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে পুলিশভ্যানে বসে নির্যাতনের শিকার স্ত্রী ববিতা সম্পর্কে সাংবাদিকদের একথা বললেন শফিকুল।
তিনি আরো বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমার এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলাম।’
ববিতার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই এমন দাবি করে ওই সেনা সদস্য বলেন, ‘আমি বিবাহিত। আমার স্ত্রী রয়েছে। গোপালগঞ্জে আমার শ্বশুরবাড়ি। আমার বিরুদ্ধে সিলেট সেনানিবাসেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেখানে ববিতার সঙ্গে বিয়ের দুটি কাবিননামা জমা দিয়েছে সে। আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন।’
দুই মাসের ছুটিতে রয়েছি দাবি করে সেনা সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার চাকরির ক্ষতি করার জন্য সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
এর আগে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে সিলেট থেকে সেনা সদস্য শফিকুল ইসলাম গ্রেপ্তান হন। নড়াইলের লোহাগড়া থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) নজরুল ইসলাম তাকে পরে নড়াইল নিয়ে আসেন।
গাছে বেঁধে স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে গত ১০ মে হাইকোর্ট ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সকল আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
নড়াইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরদার রকিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ববিতা নির্যাতন মামলায় স্বামী সেনাসদস্য শফিকুলসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এসপি রকিবুল আরো বলেন, ‘এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি কঠন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার শালবরাত গ্রামের ছালাম শেখের ছেলে সেনা সদস্য শফিকুল শেখের (২৬) সঙ্গে মোবাইল ফোনে অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী ববিতার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর গোপানে তারা বিয়ে করেন। ২৯ এপ্রিল রাত নয়টার দিকে শফিকুলের বাড়িতে ববিতা গেলে পরদিন ৩০ এপ্রিল সকালে এলাকার মাতবর আজিজুর রহমান আজুর নেতৃত্বে স্বামি শফিকুল ও তার মা, বাবা ও আরো কয়েকজন তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেদম মারপিট করা করে।
এ ঘটনায় ৫ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ববিতার স্বামী সেনা সদস্য শফিকুল শেখসহ সাত জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন ববিতার মা খাদিজা বেগম।