সোনারগাঁওয়ের বারদী ইউনিয়নে বিয়ে বাড়ির তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকেল ও শনিবার সকালে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষ, বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশুসহ অর্ধশতাধিক আহতের পাশাপাশি প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে।
জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার বারদী ইউনিয়নের দৌলরদী এলাকায় শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে আলী মিয়ার মেয়ের বিয়ের খাবার অনুষ্ঠান চলাকালে মাহমুদ মেম্বারের ছেলে স্থানীয় সন্ত্রাসী ও মাদকের ডিলার কামাল মেম্বারের সাথে আড়াইহাজার থেকে আগত বরযাত্রীদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে কিছুক্ষণ পরে উক্ত সন্ত্রাসী কামাল, ইব্রাহীম খলিল ইবু, মানিক মিয়াসহ স্থানীয় ৩০/৪০জন সন্ত্রাসী দেশীয় ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিয়ে বাড়িতে এসে হামলা চালায়।
এ সময় সন্ত্রাসীরা বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুরের পাশাপাশি বরযাত্রীদের মারধর করে এবং নারীদের শ্লীলতাহানীসহ সঙ্গে থাকা প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের হামলায় এসময় নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ২০জন আহত হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে কনের পিত্রালয়ের লোকজন পুলিশের সহযোগিতায় বর-কনেকে বিদায় জানায়।
এ ঘটনার পর স্থানীয় মাদবর প্রধানরা বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য শনিবার সকালে সালিশ বৈঠকের উদ্যোগ নিলে সন্ত্রাসী কামাল মেম্বার বাহিনী তাতে কর্ণপাত না করে বেলা ১১টার দিকে পুনরায় দেশীয় ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়নের সেনপাড়া এলাকায় প্রতিপক্ষ সাত্তার মেম্বার ও নেহাল উদ্দিন মেম্বারের ঘরসহ আশপাশের প্রায় ২৫টি ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুরের পাশাপাশি নগদ টাকা ও ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়।
এ সময় প্রতিপক্ষ গ্রুপ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসলে উভয়গ্রুপের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নারী-পুরুষসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৫০জন আহত হয়।
দ্বিতীয় দফায় হামলার ঘটনা শুনে শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে তিনিসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। ওখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।