আফগানিস্তানের তালেবানরা একের পর এক শহর দখল করে চলছেন। তালেবানদের হুমকির মুখে পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী ন্যাটো রাতের আধারে পালিয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সেনাদের এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। ২ জুলাই যুক্তরাজ্যের একটি গণমাধ্যম জানায় কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কূটনৈতিক মিশন রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এক হাজার সেনা আফগানিস্তানে রয়ে যেতে পারে।
এ খবরের পরেই তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহীন হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, কাবুলের দখল নেওয়া তালেবানের উদ্দেশ্য নয়। তবে সেনা প্রত্যাহার শেষ তারিখের পরে কোনো বিদেশি সেনা এই শহরে থাকতে পারবে না। যদি কোনো বিদেশি সেনা দেশটিতে থেকে যায়, তবে তা দখলদার হিসেবে গণ্য হবে।
হুশিয়ারির রাতেই কাউকে কিছু না বলে রাতের অন্ধকারে আফগানিস্তানে সবচেয়ে বড় বাগরাম বিমানঘাঁটি ছেড়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। এই ঘাঁটিতে একটি কারাগার রয়েছে। মার্কিন সেনারা চলে যাওয়ার পর সেখান থেকে পাঁচ হাজারের বেশি তালেবান বন্দী চলে গেছেন।
তালেবানরা এরই মধ্যে বড় কোনো সংঘাত ছাড়াই ২০০টিরও বেশি শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।তালেবানদের ভয়ে আফগানিস্তানের ১৬০০-এর বেশি সেনা তাজাকিস্তানে পালিয়েছে। আফগানিস্তানের অনেক সেনা সদস্য তালেবান বাহিনীতে যোগদান করেছেন। তালেবানরাও তাদের হাসিমুখে গ্রহণ করছেন। আফগানিস্তান সরকার বিভিন্ন দেশের সাহায্য চেয়ে না পেয়ে কোনাঠাসা হয়ে পড়ছে।
অবশ্য আফগানিস্তানের সরকারি কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে,তারা তালেবানদের দখল করা জেলাগুলো পুনরুদ্ধার করবে।
তালেবানরা কাবুল দখল না করলেও রাজধানীর উত্তর প্রদেশ বাগদাসে আফগান সেনাদের উপেক্ষা করে মহড়া দিচ্ছে। এতে সরকারি বাহিনী কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারছে না।
৭ জুলাই আফগান সরকারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তালেবান প্রতিনিধিরা তেহরানে এক বৈঠকে বসেছেন। ওই আলোচনার সূচনা করে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টিকে স্বাগত জানান। তালেবানরা তাদের ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পূর্বের নীতিতে অটল রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে বর্তমান সরকার কি পারবে আফগানিস্তানে তাদের শাসন টিকিয়ে রাখতে? নাকি শিগগিরই তালেবানদের শাসন প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে? আপনার কী মনে হয়? জানান মন্তব্যে।