খুলনায় অপহরণ ও অর্থ আদায়ে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ সোর্সরা

খুলনায় পুলিশের সোর্স পরিচয়ে একাধিক অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এসব ঘটনায় কোনো কোনো ভুক্তভোগী মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। কেউ হয়রানিমূলক মামলার আসামি হয়ে জেল খাটছেন। সর্বশেষ গত ২ মার্চ নগরীর ডালমিল এলাকা থেকে অপহৃত দুই মিস্ত্রিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তিন অপহরণকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও কথিত পুলিশ সোর্স হাসান এখনো গ্রেফতার হননি। এর আগে ২০১৩ সালে রূপসায় পুলিশ সোর্স পরিচয়ে ব্যবসায়ী বাবুল খানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, গত ২ মার্চ আব্দুস সাত্তার সরদার ও রাজু মল্লিক নামে দুই স্যানিটারি মিস্ত্রিকে ডিবি ও র‌্যাব সদস্য পরিচয়ে অপহরণ করা হয়। তারা দুই মিস্ত্রিকে মারধর করে তাদের কাছে থাকা ৪৮ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ নগরীর ডালমিল এলাকা থেকে ওই দুইজনকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুস সাত্তার সরদার বাদি হয়ে কথিত পুলিশ সোর্স হাসানসহ তিনজনকে আসামি করে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ প্রিতম ও সুমন নামে দুইজনকে গ্রেফতার করলেও সোর্স হাসানকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনাডাঙ্গা থানার এসআই মনিরুল ইসলাম জানান, মামলার এজাহারে হাসানের বিস্তারিত পরিচয় দেয়া হয়নি। এ জন্য তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। এর আগে ২০১৩ সালের ১৯ আগস্ট রূপসার জাবুসা গ্রাম থেকে ব্যবসায়ী বাবুল খানকে অপহরণ করা হয়। ২৪ আগস্ট জাবুসা বাইপাস সড়কের কালভার্ট মোড় থেকে বাবুলের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ সোর্স তনুরা খাতুনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী খাদিজা বেগম। মামলার তদন্তে ধরা পড়ে, ১৯ আগস্ট সোর্স তনুরা বেগম ফোন করে বাবুল খানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। ডালমিল এলাকার অপহরণের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশের সোর্স হাসান বানিয়াখামার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ইব্রাহিমের ভাড়াটিয়া মরহুম ছদল শেখের ছেলে। রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে নিরীহ মানুষকে আটক করানো এবং পরে দেনদরবার করে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনাই তার কাজ। এ পর্যন্ত ডালমিল মোড়ের ব্যবসায়ী চুন্নু মাস্টার, বিসমিল্লাহ মহল্লা এলাকার রবিউল মিস্ত্রি ও ইসমাইলকে একইভাবে আটক এবং পরদিন সকালে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়। অবশ্য ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মারুফ আহম্মেদ বলেন, হাসান নামে তাদের কোনো সোর্স নেই। অপহরণ মামলার পর থেকে সে পলাতক।

Exit mobile version