বিএনপির পাশে থাকবে জামায়াত

22

আসন্ন ৩ সিটি নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক দল বিএনপি অংশ নিলে পাশে থাকবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করার পরেই সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বিএনপির হাইকমান্ডকে জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

গতকাল এ কথা নিশ্চিত করে রাজনীতির মাঠ থেকে সরে থাকা জামায়াতের কয়েকজন নেতা বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে বিএনপির নেতাদের ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে জামায়াতপন্থি সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যেমে বিএনপির চেয়ারপার্সন ও ২০ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ নেতাদের পজেটিভ ধারণা দেয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব নেতা জানান, তার কয়েকদিন পরেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। সেই আগ্রহের ভিত্তিতে নানা হিসাব-নিকাশ করেই তাদের সমর্থিত প্রার্থীদের নাম ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করে দলটি। নির্বাচনের মাঠে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের হার্ড লাইনে কাজ করার জন্য বিএনপির পক্ষে থেকেও বারবার আহ্বানও জানানো হয়। জামায়াত নেতারাও বিএনপির নেতাদের এ ব্যাপারে সাড়া দেন ও আশ্বস্ত করেন। সেই আশ্বাসের ভিত্তিতে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটিতে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে নামে বেনামে নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেছেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগরের জামায়াতের একাধিক সূত্র এ প্রতিবেদককে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপিকে মাঠে রাখার কৌশল নিলেও জামায়াত নির্বাচনী গণসংযোগের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক তারা এখন একটু হলেও আলোর মুখ দেখছে। জামায়াতের বেশ কয়েক নেতা বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীদের সক্রিয় করা, স্তিমিত হওয়া রাজপথের আন্দোলনকে নবরূপে গোছোনো হচ্ছে আমাদের দলের মূল কাজ। পাশাপাশি ৩ সিটি নির্বাচনের জন্য জামায়াত নির্বাচনী মনিটরিং কমিটি গঠন করেছে বলে জানিয়েছেন বাড্ডা থানা জামায়াতের এক প্রভাবশালী নেতা। তিনি বলেন, জামায়াত নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। সেজন্য তফসিল ঘোষণার পরেই কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচনী মনিটরিং কমিটি গঠন করেছেন। এ ব্যাপারে কোন নেতাকে সমন্বয় করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তা পরে জানাব।

অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, যদি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশ না নেয়, তাহলে সাংগঠনিক শক্তি অনেকটা হারিয়ে ফেলবে দলের নেতাকর্মীরা। মূলত দলকে শক্তিশালী ও নেতাকর্মীদের ধরে রাখতে নির্বাচনের মাধ্যমে বিকল্প পথ বের করা হয়। আর সেই পথেই হাঁটছে জামায়াত।

অপরদিকে মেয়র পদে প্রার্থী না দিলেও ঢাকার ৯০টি ওয়ার্ড ও চট্টগ্রামে ৪৪ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দেবে। জয়-পরাজয়ের লক্ষ্যে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় জামায়াত। এদিকে তিন সিটিতে এককভাবে না ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী দেয়া হবে এ নিয়ে এখনো ধোঁয়াশায় রয়েছে জামায়াত। তবে এ ব্যাপারে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে প্রার্থী ঠিক করার জন্য স্থানীয় জামায়াত নেতাদের নির্দেশ দিয়েছে জামায়াতের সিটি নির্বাচন মনিটরিং কমিটি।

মতিঝিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত জামায়াতের এক নেতা বলেন, জামায়াত চাচ্ছে নির্বাচনের মাধ্যমে পলাতক বিএনপিকে রাজপথে সক্রিয় করতে। আমরাও এখন জোটের স্বার্থ দেখছি না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নেতা বলেন, প্রয়োজনে সবখানে বিএনপির প্রার্থীকে জেতাতে হবে। এ ব্যাপারে জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো অসুবিধা নেই।
মানব কণ্ঠ