বিদেশি কারাগারে ৭,০০০ বাংলাদেশি

সম্প্রতি সাগরে আটকে পড়া বাংলাদেশি অভিবাসীদের এক মাসের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

 

পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কারাগারে ৭,০০০ বাংলাদেশি নাগরিক আটক রয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

 

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বেগম নুর-ই হাসনা লিলি চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিদেশে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় সব সময় ব্যবস্থা নেয়। এর অংশ হিসেবে আগামী এক মাসের মধ্যে সাগরে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হবে।

 

তিনি বলেন, আটকে পড়াদের ফিরিয়ে আনার ব্যপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট মিশন সমন্বয়ের যৌথভাবে কাজ করছে।

 

মন্ত্রী বলেন, এরই অংশ হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কনস্যুলার অ্যাকসেসের মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে তালিকা তৈরির কাজ করছে। একই সঙ্গে পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্নকরণ, ট্রাভেল পারমিট ইস্যু ও প্রত্যাবাসন কাজ করছে।

 

তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব সময় বিদেশে বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের (জেলে আটকসহ) দেশে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সকল প্রকার ব্যবস্থা করে থাকে।

 

বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ মিশনসমূহ প্রতিনিয়তই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উক্ত দেশের কারাগারে থাকা বাংলাদেশিদের দেশে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে।

 

সরকার দলীয় সদস্য বেগম সানজিদা খানমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে বসবাস ও কর্মরত রোহিঙ্গারা বহু আগে থেকেই পরিচয় গোপন করে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে সেসব দেশে প্রবেশ করেছে। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নবায়ন এবং অন্যান্য কন্স্যুলার সেবা প্রদানে যথেষ্ট সর্তক অবস্থানে আছে।

 

এ অবস্থায় যদি কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের কোনো দূতাবাসে পাসপোর্ট নবায়ন বা নতুন পাসপোর্টের আবেদন করে এবং ওই ব্যক্তির আচরণ রোহিঙ্গা প্রতিয়মান হলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

 

আফ্রিকার দেশগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ, ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণ এবং কার্যকর কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে মরিশাসে নতুন দূতাবাস খোলা হয়েছে।

 

এছাড়া আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে আনারারি কনসাল নিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বেগবান করে পণ্য বাজার সম্প্রসারণের উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে দক্ষ ও অদক্ষ জনশক্তি রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে আফ্রিকার দেশসমূহে সরাসরি বাংলাদেশি বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

Scroll to Top