ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের এক শিক্ষকের কক্ষ থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় এক শিক্ষিকাকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন। আজ শনিবার বিকেলে ওই শিক্ষিকাকে উদ্ধার করা হয়। ওই শিক্ষিকা অ্যাডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের প্রভাষক। তিনি কলাভবনের ৩০৪৯ নম্বর কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। কক্ষটি মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আকিব-উল-হকের জন্য বরাদ্দ দেওয়া।
ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে দুজন শিক্ষকই আকিবের কক্ষে ছিলেন। একপর্যায়ে সেখানে আকিবের স্ত্রী এসে উপস্থিত হন। কক্ষ ভেতর থেকে আটকে দুজনের সেখানে অবস্থান নিয়ে কথা বললে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিক্ষিকাকে কক্ষে আটকে রেখেই তিনি সেখান থেকে চলে যান।
আকিবের স্ত্রীর অভিযোগ, অনেকক্ষণ ধরে মুঠোফোন না ধরায় তিনি কলা ভবনে আকিবের কক্ষে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে দরজা তালাবদ্ধ দেখতে পান। বেশ কিছুক্ষণ দরজা ধাক্কাধাক্কি করার পর তিনি দরজা খুলে বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেন। তখন তাঁদের দুজনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে আকিব সেখান থেকে চলে যান। পরে তিনি জানতে পারেন ভেতরে শিক্ষিকা আটকা পড়ে আছেন।
খবর পেয়ে সহকারী প্রক্টর আবু হোসেন মুহাম্মদ আহসানের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল দল গিয়ে কক্ষের তালা ভেঙে শিক্ষিকাকে উদ্ধার করেন। ওই শিক্ষিকা প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আকিবের দাম্পত্য কলহ চলছিল বলে তিনি জানেন। হঠাৎ তাঁর স্ত্রী সেখানে চলে আসলে তিনি রাগারাগি করে সেখান থেকে চলে যান। কিন্তু তাঁকে কেন তালাবদ্ধ করে গেলেন, সেটি বুঝতে পারছেন না।
শিক্ষিকা বলেন, ‘আমি আমার বিভাগের একটি কর্মশালার কাজে ছুটির দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম। আকিবও তাঁর ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন। হঠাৎ দেখা হয়ে যাওয়ায় তাঁর সঙ্গে এখানে আসি। আমাদের একটি যৌথ গবেষণাকাজ অসমাপ্ত ছিল। সেটি শেষ করা নিয়ে আমাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হচ্ছিল। এমন সময় আকিবের স্ত্রী চলে আসেন। এর আগেও একই ঘটনা ঘটেছিল বলে তিনি জানান।’
এর আগে গত ৫ আগস্ট দুজনকে একই কক্ষে পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছিলেন আকিবের স্ত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করে মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আকিবকে বিষয়টি বুঝিয়েছি। তিনি যেন ওই শিক্ষিকা থেকে নিজেকে ফিরিয়ে নেন। কারণ তার একটি বাচ্চাও রয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে আকিব-উল-হকের ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। সেখানে একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর কাছ থেকে অবহিত হয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
প্রথম আলো