৯০ দশকের পর্দা কাঁপানো মিঠুন কিভাবে ইসলামের ছায়াতলে আসলেন..আসুন একটু জেনে নেই…..

mithun

একদিন মাটি হয়ে যেতে হবে তাই এখনই মাটির মতো হও । আল্লামা শেখ সাদির এই উক্তিটি শেখ আবুল কাসেম মিঠুন ভাইয়ের প্রিয় উক্তি । তিনি আজ ইন্তেকাল করেছেন । বেশ কিছুদিন শুনছিলাম তাঁর অসুস্থতার খবর । খুলনায় মায়ের সাথে দেখা করতে গিয়ে অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় সেখান থেকে ভারতে নেয়া হয়েছিল ।

প্রায় ষাট সত্তরটি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এই ইসলামপন্থী চলচ্চিত্র নায়ক ।

তার নামের সাথে ইসলাম পন্থি শব্দটা ব্যবহার করা হয় । ৯০ দশকের পর্দা কাঁপানো মিঠুন কিভাবে ইসলামের ছায়াতলে আসলেন । আসুন একটু জেনে নেই ।

(তার সোনালী দিনের কিছু স্মৃতি , বাংলাদেশের নাম করা অভিনেতা/নেত্রিদের সাথে )

বাংলাদেশে ইসলাম নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন তাদের নিয়মিত দাওয়াতি দশক চলছিল সে সেময় । এরশাদ বিরোধী উত্তাল বাংলাদেশের পরবর্তী মুহুর্ত । ঢাকার প্রতিটি ওলি ,গলি, দোকান রেস্তরাকে টার্গেট করে উপমহাদেশের অন্যতম ইসলামী চিন্তাবিদের হাকিকত সিরিজের বই বিলি চলছে ।

ফজরের পরবর্তি সময় । (সম্ভবত) রমনা পার্কের কোন এক গেটে ছিলেন নায়ক মিঠুন তার গাড়িতে । দাওয়াতি দশকের এক দল দায়ী তার গাড়ির জানালা দিয়ে অনুরোধ করলেন একটা বই নিয়ে পড়ার জন্য । প্রথমে না করলেন । দ্বিতীয় বার অনুরোধ ফেলতে পারলেন না । বললেন , “ঠিক আছে রেখে যান সময় হলে পড়ে নিব ”

সেই শুরু । একটা বই তাকে নিয়ে আসলো আলোর কাছে । খুঁজতে লাগলেন হাকিকত সিরিজের অন্যান্য বই গুলো । বই বিলি কারি সেই মানুষ গুলো কেও পেয়ে গেলেন , আস্তে আস্তে তাদের সান্নিধ্য পেয়ে চলচিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে আনলেন । তার বিশাল বাজার মন্দা হয়ে গেলে । ইনকাম সোর্স অচল হয়ে পড়লো ।

তখন মরহুম কবি “গানের পাখি” মল্লিক ভাই তাকে নিয়ে এলেন “প্রত্যশায়” শুরু হল তার নতুন চলচিত্র ।

নিজেই ছিলেন অনেক চলচ্চিত্রের কাহিনী ও চিত্রনাট্য পরিচালক । কবি মতিউর রহমান মল্লিকের সাথে পরিচয়ের সুবাদে কোরআন হাদিস ও ইসলামী সাহিত্যের ব্যপক অধ্যয়ন করেন । তারপর শুরু করেন নতুন ধারার চলচ্চিত্র ও ইসলামী সংস্কৃতির চর্চা । মল্লিক ভাইয়ের ইন্তেকালের পর তিনিই ছিলেন বংলাদেশ সংস্কৃতি কেন্দ্রের (প্রত্যাশা প্রাঙ্গন ) নির্বাহী পরিচালক .

একটি অনলাইন পত্রিকায় কাজ করার সুবাদে মিঠুন ভাইয়ের কয়েকটি প্রবন্ধ সেখানে প্রকাশ করেছিলাম । ফেসবুকে আমি মাঝেমাঝে যে দুয়েকটি লেখা লিখেছি তিনি তা খুব মনোযোগ দিয়ে পড়তেন । মন্তব্য করতেন এবং এরকম আরও কিছু লেখার জন্য উৎসাহ দিতেন ।

বিপরীত উচ্চারণ সাহিত্য সভায় যাতায়াতের সুবাদে মিঠুন ভাইকে বহুবার দেখেছি , আলোচনা ও বক্তৃতা শুনেছি । বাংলাদেশে ইসলামী ধারার নাটক এবং বিশেষ করে চলচ্চিত্র নির্মাণে তিনি যে সুচনা করে গেছেন তার পরিপূর্ণ বিকাশ একদিন ঘটবেই । আল্লাহ পাক তাঁর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুন

এক সময়য়ের দেশ সেরা নায়ক আবুল কাশেম মিঠুন ভাই , তার জাহেলী জীবনের স্বপ্ন নিয়ে একটি গান লিখেছিলেন । গানটিতে শুর দিয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামি কন্ঠশিল্পী মশিউর রহমান । ব্লগার শঙ্খচিল   মেহেদী হাসান

Exit mobile version