লুকটা আমূল বদলে ফেলেছেন। হেয়ার স্টাইল, কস্টিউম থেকে শুরু করে হাঁটাচলা, অভিনয়ের ঢং-সব কিছুতেই বদল এনেছেন। ব্যাংকক যাওয়ার আগে টানা ১৫ দিন মারপিটের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ‘অগ্নি ২’-এর পাণ্ডুলিপিটা হাতে পেয়ে নিজের চরিত্র নিয়ে রীতিমতো গবেষণায় নেমে পড়লেন। আর এত কিছুর পেছনে কারণ একটাই। “আমাদের দেশে নাকি সিক্যুয়াল ছবি চলে না। এর আগে শহিদুল ইসলাম খোকন ‘ভণ্ড’র সিক্যুয়াল ‘চেহারা’ নির্মাণ করেছিলেন। ছবিটি চলেনি। ভালো চলেনি ‘মোস্ট ওয়েলকাম ২’ও। ফলে ‘অগ্নি ২’ নিয়েও একটা সংশয় কাজ করছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার। আমাকে তারাই বলেছিল, যদি ‘অগ্নি’র মাহিকে ছাড়িয়ে যেতে পারি, তাহলেই ছবিটি নির্মাণ করবে। আমি ওদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি। ‘অগ্নি’তে দর্শক আমাকে যেমন দেখেছেন ‘অগ্নি ২’-তে এর চেয়েও ভয়ংকররূপে দেখবেন।
“যে মাহি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আরো বেশি মরিয়া, ২০ তলা বিল্ডিং থেকে লাফ দিতে পিছপা হয় না, সমুদ্র চষে বেড়ায় ভিলেনকে শায়েস্তা করার জন্য। আশা করি ‘অগ্নি ২’ ব্যবসায়িকভাবে ‘অগ্নি’কেও ছাড়িয়ে যাবে”-বললেন মাহি। এক মাস ধরে ব্যাংককে শুটিং করছেন তিনি। ‘অগ্নি ২’-এর পুরো ইউনিট এখন সেখানে। ইউনিটে আছেন আশিষ বিদ্যার্থীর মতো বলিউড অভিনেতা। এখানে তিনি খলনায়ক। সেই সঙ্গে আছেন কলকাতার নায়ক ওম। ছবিতে মাহির নায়ক ওম। এরই মধ্যে ছবিটির বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ ভারতের বিভিন্ন লোকেশনে করা হবে বলে জানালেন মাহি। সেটা শেষ হলেই দেশে ফিরবেন। তারপর? প্রশ্নটা শুনে অবাক হলেন। বললেন, ‘তারপর অবশ্যই নতুন ছবির কাজ শুরু করব। বেশ কয়েকটি ছবিই তো আমার হাতে জমা!’ কিন্তু খবর রটেছে, জাজ মাল্টিমিডিয়া নাকি মাহিকে নিয়ে আর ছবি বানাবে না! কথাটি শুনে আবারও অবাক হলেন তিনি। “জাজ কি আমাকে নিয়ে ছবি বানাবে না ঘোষণা দিয়েছে! ‘অগ্নি ২’-এর পর তো এই প্রোডাকশনের ‘নিয়তি’ ও ‘পুলিশগিরি’ শুরু হবে। প্রথমটির পরিচালক জাকির হোসেন রাজু এবং দ্বিতীয়টির পরিচালক সৈকত নাসির। তাঁদের চুক্তিবদ্ধও করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আমার শিডিউলও নিয়েছে। তাহলে লোকজন কিভাবে এসব খবর রটায়! এ প্রতিষ্ঠানেরই ছবি ‘অনেক দামে কেনা’ ১৫ মে মুক্তি পাবে। সেখানেও তো আমি রয়েছি”-ব্যাংকক থেকে বললেন মাহি।
এদিকে জাজের কর্ণধার আব্দুল আজিজ আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে পরবর্তী ছবির নতুন নায়িকাকে পরিচয় করিয়ে দেবেন। খবরটি মাহিরও নাকি অজানা নয়। আর এ নিয়ে চিন্তিতও নন তিনি, “জাজের প্রথম ছবি ‘ভালোবাসার রং’ থেকেই আমি কাজ করছি। এ প্রতিষ্ঠানের ১০টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছি। ‘পোড়ামন’, ‘অনেক সাধের ময়না’, ‘অগ্নি’, ‘রোমিও ভার্সেস জুলিয়েট’-এর মতো সুপারহিট ছবিও উপহার দিয়েছি। এখন তারা যদি মনে করে, ইন্ডাস্ট্রিতে আরেকজন মাহির জন্ম দেওয়া উচিত, তাহলে স্বাগত। তবে হ্যাঁ, আমার মতো কাজে মনোযোগী কিংবা কঠোর পরিশ্রমী কাউকে পাবে কি না সেটা কিন্তু ভেবে দেখার বিষয়। আজকের মাহি এক দিনে তৈরি হয়নি। আমি তিলে তিলে নিজেকে গড়েছি। এখন আমার দর্শক তৈরি হয়েছে। জাজের বাইরে ছবি করলেও দর্শক আমাকে নিশ্চয় গ্রহণ করবে।” হাসিমুখে মাহি যতই বলছেন তিনি ‘চিন্তিত’ নন, কিন্তু ভেতরে ভেতরে তিনিও পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছেন। সম্প্রতি একটি দৈনিকের খবর, দেশে ফিরে বোমা ফাটাবেন মাহি। কী সেই বোমা? কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। পরক্ষণেই ‘বোমা’র কথা স্বীকার করে নিলেন, ‘বিষয়টি তোলা থাক। এখনই পাড়তে চাই না। দেশে ফিরে আমিও একটি সংবাদ সম্মেলন করব। অনেক কিছুু বলার আছে আমারও। ইন্ডাস্ট্রিকে জানানোর আছে। নিশ্চয় কিছু সিক্রেট বিষয় সেদিন তুলে ধরব, যা শুনে সবাই অবাক হবেন।’
তবে সহসাই ফিরছেন না মাহি। ব্যাংকক থেকে ভারত হয়ে দেশে ফিরবেন। ভারতে কী? ‘অগ্নি ২-এর কিছু কাজ হবে সেখানে। এ ছাড়া কলকাতার একটি ছবিতে অভিনয়ের কথা চূড়ান্ত হয়েছে। হয়তো এ বছরের শেষের দিকে ছবিটির শুটিং শুরু করব। তবে পরিচালক ও নায়কের নাম এখনই বলতে চাচ্ছি না’-মাহির উত্তর।