অপু এখন কী করবেন

560

আগামী ২১ ডিসেম্বর শুটিং শেষ করে ভারত থেকে দেশে ফেরার কথা শাকিব খানের। এর আগে তালাকনামার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করার কোনো ইচ্ছে নেই অপু বিশ্বাসের। তিনি বলেন, জীবনে ভালো ও খারাপ সময় আসবে। মেনে নিতে হবে। আমি এখন সময়কে মেনে নেয়ার চেষ্টা করছি।

অপু বরাবরই বলছেন- সংসার টিকিয়ে রাখাই তার প্রধান উদ্দেশ্য। তারপরেও শাকিব তালাকনামার নোটিশ পাঠিয়েছেন। এর কারণ কী? অপু বলেন- ‘সেই প্রশ্ন তো আমারও। ও যে দুটি অভিযোগ করেছে দুটিই মিথ্যে। খুব সহজেই বোঝা যায় এগুলো পরিকল্পিত। আমি অসুস্থ হয়ে শিলিগুড়িতে গিয়েছি; বেড়াতে নয়। স্বামীকে পাশে পাইনি সেটা আমার জন্য কষ্টের। আর স্বামী হিসেবে শাকিবের জন্য ব্যর্থতার। ছেলেকে একা রেখে গেলেও তার সব নিরাপত্তা একজন মা হিসেবে আমি নিশ্চিত করে গেছি।’

আর তার সব আদেশ-নিষেধ যদি নাই শুনতাম, তবে সিনেমা ছাড়তাম না। আট বছর সম্পর্ক লুকিয়ে রাখতাম না। ছেলে হবার খবর সবার কাছে লুকিয়ে রাখতাম না। ছেলের অধিকার চেয়ে, স্ত্রীর পরিচয় নিয়ে স্বাধীনভাবে বাঁচতে চেয়ে প্রকাশ্যে আসাটা কি অন্যায় আমার? ও যে আমাকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করেছে সেটার দায় কে নেবে? আমি তো সেসব অভিযোগ করি না কখনো। কারণ, আমি শাকিবকে আজও ভালোবাসি। আজও তার স্ত্রী হয়ে সংসার নিয়ে সুখী হতে চাই।’

অপু বলেন- ‘আমি খুব কষ্ট পেয়েছি আমার বয়ফ্রেন্ড আছে বলে দাবি করেছে শাকিব। কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে এভাবে দুশ্চরিত্রা বানানোর পারিকল্পনা করতে পারে, সেটা ভাবাও লজ্জার। এর আগেও আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলেছে। যার-তার সাথে সে আমার সম্পর্ক বানিয়ে দেয়। এতদিনের ক্যারিয়ারে আমি তো তার চরিত্র নিয়ে কথা বলিনি কখনো। নায়িকাদের সাথে সম্পর্ক আছে বলে তাকে ডিভোর্স দেয়ার কথা ভাবিনি।’

‘আমি খুবই অবাক হয়েছি বাপ্পী চৌধুরীর সাথে আমার সম্পর্ক রয়েছে এমন গুজবে। বাপ্পী আমার ছোট ভাইয়ের মতো। সে আমাকে সম্মান করে। শাকিবকেও অনেক শ্রদ্ধা করে। সে আমার ছবির নায়ক হয়ে গেল বলেই যে আমার ঘরেরও নায়ক হয়ে যাবে এটা ভাবার তো কোনো অবকাশ নেই। তবে তো সব নায়িকারই অনেক প্রেমিক রয়েছে। অনেক নায়কের সাথেই তারা কাজ করেন। শাবনূর-মৌসুমী আপারাও তাদের জুনিয়রদের নায়িকা হয়ে সিনেমা করেছেন। তাদের স্বামী বা পরিবারের কেউ কি এমনটা ভেবেছেন? কখনোই না। কারণ, সিনেমা আমাদের পেশা। এখানে আমি যেমন অনেক নায়কের সাথে কাজ করব, তেমনি শাকিবও অনেক নায়িকাদের সাথে কাজ করছে। তবে কেমন করে বাপ্পীকে নিয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের গুজব ছড়ানো হয়?’

এই চিত্রনায়িকা আরো বলেন- ‘আমি মনে করি যারা বাপ্পীকে আমার প্রেমিক বানিয়েছে তারা মানসিকভাবে অসুস্থ। তাদের মানসিক চিকিৎসা দরকার। আমাকে ছোট করা হয়েছে, বাপ্পীকেও অপমান করা হলো- এ গুজব ছড়িয়ে। কষ্টের ব্যাপার হলো শাকিব এসব গুজবের প্রতিবাদ না করে সব বিশ্বাস করেছে। সেই মিথ্যে বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে আমাকে ডিভোর্স দিতে যাচ্ছে।’

অপু বিশ্বাস বলেন- ‘শাকিব খুব ভালো করেই জানে ‘বয়ফ্রেন্ড’র গুজব সত্যি নয়। সে আমাকে খুব ভালো করেই চেনে। আমি মান্না ভাই, রিয়াজ ভাইদের সাথেও কাজ করেছি। তারা আমাকে বোনের মতো স্নেহ করেন, পছন্দ করেন। মান্না ভাই তো চলে গেলেন আমার বিয়ের আগেই। রিয়াজ-ফেরদৌস ভাইয়েরা জানতেন বিয়ের ব্যাপারটা। শাকিবের স্ত্রী হিসেবে আরও বেশি স্নেহ করতেন তারা। কেউ কখনো বলতে পারবে না কোনো নায়কের প্রতি আমার কোনো মোহ বা প্রেম ছিল। আমি যদি অন্য কারো প্রতি আসক্তই থাকতাম তবে শাকিব আমাকে পাগল হয়ে বিয়ে করতো না। ওকে ভালোবেসে আমি ক্যারিয়ার, ধর্ম- সব স্যাক্রিফাইস করেছি। ও তো সবই ঠিক রেখেছে। তার উপর জুনিয়র নায়ককে আমার প্রেমিক বানানোর অপবাদও সইতে হবে? এটাই কি জগতের নিয়ম? আমার ছেলেটা বড় হয়ে যখন এসব শুনবে, তখন সে কিভাবে মূল্যায়ন করবে তারা বাবা-মাকে? সে কি স্বাভাবিক একটা জীবন দাবি করে না? শাকিব কেন এসব ভাবতে পারে না আমি বুঝে উঠতে পারছি না।’

উল্লেখ্য, গত ২৮ নভেম্বর অপুর ঢাকা ও বগুড়ার ঠিকানায় তালাকনামার নোটিশ পাঠিয়েছেন শাকিব।