রুবেলের বিরুদ্ধে হ্যাপির মামলা এবার ট্রাইব্যুনালে

জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির দায়ের করা ধর্ষণ মামলাটি ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়েছে। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেটার রুবেল হোসেন।

সোমবার ঢাকার মেট্রোপলটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল হকের আদালতে মামলাটিতে তদন্ত কর্মকর্তার দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হলে বিচারক মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত বিধায় নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন। ৫ নম্বর নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালেই ওই মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হইবে।

গত ১৯ মার্চ ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি আদালতে দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক হালিমা খাতুন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিকটিম হ্যাপিকে ডাক্তারী পরীক্ষা করা হইলে ৩ সদস্য বিশিষ্ট মেডিক্যাল বোর্ড জানায় সম্প্রতি হ্যাপির শরীরে কোথাও জোরপূর্বক ধর্ষনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

হ্যাপির (বাদী) দাবী অনুযায়ী রুবেলের পরিহিত জার্সি, পাপোষ এবং নাইটি পরীক্ষা করে তাহাতে রুবেলের কোন শুক্রানু পাওয়া যায়নি মর্মে বিশেষজ্ঞগণ অভিমত দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হ্যাপি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক, মিডিয়াতে কাজ করা সচেতন ও আধুনিক একজন ব্যক্তি। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও বিবাহ নামক সম্পর্ক ছাড়া যদি তিনি রুবেলের সাথে মেলামেশা করিয়া থাকেন তবে তিনি সেটা তার (বাদী) সম্মতিতেই হইয়া থাকিতে পারে। কিন্তু বাদীর অভিযোগ মতে সেটা ধর্ষনের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না।

তাছাড়া হ্যাপি তার বক্তব্যের সমর্থনে কোন সাক্ষ্য প্রমান হাজির করতে পারেনাই বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বাদী (হ্যাপি) রুবেলের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষনের যে অভিযোগ করিয়াছে তাহা সঠিক নয় বলে প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে।

প্রতিবেদনের শেষদিকে বলা হয়েছে, সার্বিক তদন্ত, সাক্ষ্য, ডাক্তারী রিপোর্ট, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করিয়া দেখা যায় রুবেলের বিরুদ্ধে হ্যাপীর অভিযোগ সঠিক নয়। এজন্য তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের নিকট আসামি রুবেলের অব্যাহতি প্রার্থনা করিয়াছেন।

এদিকে রুবেলের অব্যাহতি চেয়ে তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন বিষয়ে হ্যাপির আইনজীব অ্যাডভোকেট শাহজামান হাওলাদার তুহিনের সাথে যোগাযোগ করলে বাংলামেইলকে জানান, হ্যাপীর সাথে যোগাযোগ করে তিনি পরবর্তী করনীয় ঠিক করবেন।

উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর নবাগত অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি ধর্ষণের অভিযোগ এনে রাজধানীর মিরপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯/১ ধারায় এই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রুবেল তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

মামলা দায়েরের পর রাত সাড়ে ৭টার দিকে নায়িকা হ্যাপীকে পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নেয়া হয়। পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগে তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। কিন্তু কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

নবাগত এ নায়িকা ‘কিছু আশা কিছু ভালবাসা’ চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এছাড়া তার কয়েকটি চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী।

Exit mobile version