ফোনে ভাইরাস ম্যালওয়্যার! উপায়?

ভাইরাস কী!

অন্য সব সফটওয়্যারের মতো ভাইরাসও এক ধরনের প্রোগ্রাম। ব্যবহারকারীরা দরকার বুঝে সফটওয়্যার ইনস্টল দেন। অর্থাৎ এখানে ব্যবহারকারী জেনেশুনেই প্রোগ্রামটি চালনার অনুমতি দেন। কিন্তু ভাইরাসের বেলায় তা হয় না। এ প্রোগ্রাম সুযোগ বুঝে ব্যবহারকারীর ডিভাইসে ঢুকে পড়ে। কোনো কোনো ভাইরাস ডিভাইসের ফাইল নষ্ট করে দেয়। আসল ফাইল লুকিয়ে ভুয়া ফোল্ডার তৈরি করে রাখে। কিছু ভাইরাস ডিভাইসের স্বাভাবিক গতির ওপরও প্রভাব ফেলে। ব্যবহারকারীর ফাইল চুরি করতেও হ্যাকাররা প্রোগ্রাম তৈরি করে ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে দেয়।

আবার অ্যান্টিভাইরাস নির্মাতারাও বাজার ধরতে ভাইরাস ছড়ায় বলে অভিযোগ আছে। প্রতিপক্ষ প্রতিষ্ঠানের অ্যান্টিভাইরাসের কার্যকারিতা দুর্বল করে নিজেদের এগিয়ে রাখতেই এমনটি করা হয়।

মোবাইলে যেভাবে ছড়ায়

মোবাইলে বিভিন্ন কায়দায় ভাইরাস ছড়ায়। কম্পিউটারের সঙ্গে মোবাইল সংযোগ দিয়ে ফাইল আনা-নেওয়ার সময় ভাইরাস ঢুকতে পারে।

ডাউনলোডের সময় বিভিন্ন কনটেন্টের সঙ্গেও ভাইরাস থাকতে পারে। কোনো উপায়ে একটি মোবাইলে ভাইরাস হানা দিতে পারলে তা মেমোরির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত মোবাইল থেকে অন্য মোবাইলে ফাইল আদান-প্রদান করলেও ভাইরাস ছড়ায়। মানহীন অ্যাপ বা সফটওয়্যার ব্যবহারে সতর্ক থাকা ভালো। কারণ প্রোগ্রামাররা এ ধরনের অ্যাপের আড়ালেও ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়।

ম্যালওয়্যার আতঙ্ক!

মোবাইলের জন্য ভাইরাসের আরেক আতঙ্কের নাম ‘ম্যালওয়্যার’। স্মার্টর্ফোনে কনটেন্ট কিংবা অ্যাপ ডাউনলোডের সময় ভাইরাসের মতো ম্যালওয়্যারও ঢুকে পড়তে পারে! তবে এর আসল কাজ ভাইরাসের মতো ফাইল নষ্ট বা ডিভাইসের গতি কমানো না। দরকারি তথ্য হাতিয়ে নিতে এ ধরনের প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়।

সেটে অ্যান্টিভাইরাস চালু থাকলে তা ভাইরাসের পাশাপাশি ম্যালওয়্যারও ঠেকাবে। ব্যবহারকারী দক্ষ হলে অ্যান্টিভাইরাস চালু না রেখেও ম্যালওয়্যারের উপস্থিতি টের পাবেন। তাই বলে অ্যান্টিভাইরাসের ওপর ভরসা ছাড়লে বিপদ!

অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার না করেও কিছু লক্ষণ দেখে ফোনে ম্যালওয়্যারের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়।

চার্জ বেশিক্ষণ না থাকলে : আপনি শুধু কল গ্রহণ করছেন বা দিচ্ছেন, কিন্তু আপনার ব্যাটারির চার্জ বেশিক্ষণ থাকছে না। তখনই বুঝতে পারবেন যে আপনার স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার আছে। কারণ ম্যালওয়্যার আপনার অজান্তেই ফোনে অনেক প্রোগ্রাম চালু রাখে।

অতিরিক্ত ফোন বিল : অ্যানড্রয়েড ম্যালওয়্যার আপনার ফোন থেকে এমন কিছু নম্বরে এসএমএস করতে থাকবে, যেসব নম্বরে এসএমএসের চার্জ বেশি। আর এ কাজ হবে আপনার অজান্তে। আপনি বুঝতে পারবেন ফোন বিল দেখে। তবে কিছু ম্যালওয়্যার মাসে বা সপ্তাহে একটি এসএমএস পাঠিয়ে থাকে।

তথ্য চুরি : ম্যালওয়্যার আপনার ফোন থেকে ডাটা স্থানান্তর করে অন্য একপক্ষকে, যা বুঝতে পারবেন আপনার ডাটা প্ল্যান বিল থেকে। আপনার ডাউনলোড বা আপলোড লিস্ট দেখেও বুঝতে পারবেন আপনার ফোন কেউ নিয়ন্ত্রণ করছে কি না। এ সমস্যা রোধ করা যাবে ডাটা মিটার ব্যবহার করে।

বিপজ্জনক যত ম্যালওয়্যার

স্মার্টফোনের লাখ লাখ ম্যালওয়্যার তৈরি করছে সাইবার অপরাধীরা। তবে এর মধ্যে কিছু ম্যালওয়্যার খুবই বিপজ্জনক। এসব ম্যালওয়্যারের নাম ও কাজ জানা থাকলে সতর্ক থাকা সহজ হবে।

ট্রোজান ফেইক ইনস্টল : এটি বিভিন্ন অ্যাপ ইনস্টল করানোর মাধ্যমে আপনাকে বিশ্বাস করাবে যে অ্যাপগুলো খুব প্রয়োজনীয়। ম্যালওয়্যারটি ক্রমাগত এর ফাইল সাইজ ও আইকন পরিবর্তন করে থাকে। বিভিন্ন জনপ্রিয় গেমস অ্যাসফ্যালট ৬, বিকিওয়েলডেড, ডুডল জাম্পসহ আরো অন্যান্য গেমসের মাধ্যমে এ ভাইরাসটি ছড়ায়।

ট্রোজান এসএমএস স্যান্ড : একই নম্বরে এসএমএস পাঠাতে থাকে এবং আপনার মোবাইল বিল ক্রমাগত বাড়তে থাকে।

ট্রোজান ফেইকডক : এটি অ্যাডওয়্যার, স্পাইওয়্যার বা অন্যান্য ম্যালওয়্যার সার্ভার থেকে ডাউনলোড হয়ে আপনার ফোনের সিস্টেমকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। আর এ থেকে দূরে থাকতে হলে একটি ভালো মানের অ্যান্টিস্পাইওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।

ট্রোজান ফেইকলুকআউট : এটি আপনার অ্যানড্রয়েড ডিভাইস থেকে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নিকটতম এফটিপি সার্ভারও পাঠিয়ে দেয়। এই ট্রোজানটি গুডবাইটস ল্যাব, যা মোবাইল সিকিউরিটি অ্যাপ্লিকেশনের Updates নামে আসে। ট্রাস্টগো ল্যাব একে com.updateszxt নামে গুগল অনলাইন অ্যাপস মার্কেটটেপ্লেসে পেয়েছে।

Scroll to Top