সেনিটারি ন্যাপকিন

স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারে মেনে চলুন সতর্কতা

পিরিয়ডের সময় নারীদের সবচাইতে জরুরী ব্যবহার্য জিনিসটি হচ্ছে স্যানিটারি ন্যাপকিন। এই পণ্যটি নিয়ে লজ্জা পাবার কিছু নেই, এটা খুবই সাধারণ একটি পণ্য। কিন্তু আমাদের দেশের নারীরা বিষয়টি লুকিয়ে রাখতে চান বিধায় স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন প্রায়ই।

অসংখ্য নারী নানান রকম ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়ে থাকেন শুধুমাত্র এই স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভুল কারণেই। খুব ভালো পণ্য ভেবে অনেক দাম দিয়ে এমন ন্যাপকিন ব্যবহার করেন, যা তাঁকে ফেলে দেয় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। অনেক বেশী শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন, অনেকটা সময় লিকেজ প্রতিরোধ করে এমন প্যাড ব্যবহার করেন? জেনে রাখুন, এই ন্যাপকিন হতে পারেন আপনার ক্যান্সারের কারণ! লজ্জা নয়, সচেতনতা জরুরী। চলুন, জেনে নিই বিস্তারিত।

১) স্যানিটারি ন্যাপকিন কতক্ষণ পর পর বদল করা ভালো? এই তথ্যটি অনেকেই জানেন না। অনেকেই আছেন যারা একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন কম ব্লিডিং হয়েছে ভেবে দীর্ঘসময় যাবত ব্যবহার করেন। রক্তপাত কম হোক বা বেশী, একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন কখনোই দীর্ঘ সময় ব্যবহার করবেন না। ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর পর বদলে ফেলুন। যদি রক্তপাত বেশী হয়, তাহলে প্যাড নষ্ট হওয়া মাত্রই বদলে ফেলুন। জমে থাকা রক্তে নানান রকম জীবাণু সংক্রমণ করে আপনি আক্রান্ত হবেন যৌনাঙ্গের নানান রকম অসুখে ও ফাঙ্গাল ইনফেকশনে।

২) প্রত্যেকবার স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলের সময় নিজেকে ভালোভাবে পরিছন্ন করে নিন। না, কেবল পানি দিয়ে নন। উষ্ণ পানির সাথে জীবাণুনাশক সাবান বা বডি ওয়াশ দিয়ে নিজেকে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। তারপর স্থানটি জীবানুনাশক কোন লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ও মুছে নিয়ে তবেই স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করুন।

৩) প্রত্যেকবার স্যানিটারি ন্যাপকিন পরিবর্তনের সময় পরনের প্যানটিও বদলে ফেলবেন। এটা জরুরী। নাহলে এত কষ্ট করে পরিষ্কার হবার কোন মানে নেই।

৪) চেষ্টা করবেন অধিক শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন প্যাড ব্যবহার করতে। এউ পণ্য গুলোতে ব্যবহার করা হয় সিনথেটিক উপাদান এবং শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহার করা হয় ডায়অক্সিন, রেয়নের মত ক্ষতিকর রাসায়নিক। যত বেশী শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন, এসব উপাদানের পরিমাণ ততই বেশী। আর এই সব উপাদান দায়ী ওভারিয়ান ক্যান্সার হতে শুরু করে সন্তান না হওয়া পর্যন্ত হরেক রকম ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য।

৫)কৃত্রিম সুগন্ধীউক্ত প্যাড দেখে আকৃষ্ট হয়ে কিনে ফেলবেন না। চটকদা বিজ্ঞাপনেও ভুলবেন না। এই উপাদানগুলো আপনার গোপন অঙ্গে কালো দাগ ও এলারজিক রিঅ্যাকশনের জন্য দায়ী।

৬) প্যাড ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিক শোষণ ক্ষমতার দিকে না গিয়ে নরম তুলো বা সুতি কাপড়ের তৈরি অরগানিক প্যাড কিনুন। এখন আমাদের দেশেও এগুলো কিনতে পাওয়া যায়। বিজ্ঞাপনে একটি পণ্যকে ভালো বললেই সেটা ভালো হয়ে যায় না।

৭) ব্লিডিং-এর পরিমাণ কম থাকলে এবং আপনি যখন বাড়িতে আছে, তখন চেষ্টা করুন প্যাড ছাড়াই থাকতে। ২৪ ঘণ্টা এক টানা প্যাড পরিধান থেকে গোপন অঙ্গে দুর্গন্ধ তো হবেই, সাথে ব্যাকটেরিয়াল ও ফাঙ্গাল ইনফেকশনও হবে।

Scroll to Top