খাবারের আঁশ পরিপাকনালি থেকে আমাদের খাবারের কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেয়। এতে রক্তে কোলেস্টেরলসহ চর্বির মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তনালির রোগ বা অ্যাথেরোসক্লেরোসিস হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। খাদ্য গ্রহণের পর আমাদের রক্তের গ্লুুকোজের মাত্রা যাতে হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে, সে ব্যাপারে আঁশজাতীয় অংশ গুরুত্ব বহন করে। এতে ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি কমে। আবার যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক সময় রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে, সেক্ষেত্রে আঁশজাতীয় খাবার সেটির নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। দেখা গেছে, যারা বেশি আঁশজাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন, তাদের পিত্তথলির রোগ ও লিভারের রোগও কম হয়। উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রাপ্ত মোটামুটি সব খাবারের মধ্যেই কমবেশি আঁশজাতীয় অংশ আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেমি আছে শাকসবজিতে।
আঁশসমৃদ্ধ খাবার : কচুশাক, মিষ্টি আলুর শাক, কলমিশাক, পুদিনা পাতা, পুঁইশাক, মুলাশাক, ডাঁটাশাক, লাউয়ের ও মিষ্টি কুমড়ার আগা-ডোগা শাকে প্রচুর আঁশ রয়েছে। অপেক্ষাকৃত বেশি আঁশযুক্ত সবজি হলো শজনে, কলার মোচা, ঢেঁড়স, ডাটা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, শিম, পটোল, কচু, বেগুন, বরবটি, মটরশুঁটি। বেল, পেয়ারা, কদবেল, আমড়া, আতাফল, নারকেল, কালোজামের মধ্যেও আঁশ আছে। এছাড়া গাব, কামরাঙা, পাকা টমেটো, পাকা আম, পাকা কাঁঠাল, আপেল ও আমলকীর মধ্যে মাঝারি পরিমাণে আঁশ থাকে। মটর, মুগ, ছোলা ও খেসারি ডালে ভালো আঁশ পাওয়া যায়। যব, ভুট্টা, আটা, তিল, কাঁচামরিচ ও সরিষাতেও আঁশ অংশ বিদ্যমান। গতানুগতিক আংশিক ভুল খাদ্যাভ্যাস সম্পূর্ণ শুদ্ধ খাদ্যাভাসে পরিণত করা সম্ভব। এতে আপনি থাকবেন সুস্থ। মনে হবে বেঁচে থাকা মানেই সুস্থতা। তাই আঁশযুক্ত খাবার রাখুন প্রতিদিনের খাবারের তালিকায়, পরিমাণে ও রান্নার ভিন্নতায়।
ডা. শাহজাদা সেলিম
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল