রোগ নিরাময়ের জন্য অ্যালোপ্যাথিক ডাক্তারের দ্বারস্থ হন অনেকেই। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টা মাথায় থাকে না তখন। বিশেষ করে টাইফয়েড, ডায়রিয়া, কলেরার মতো পেটের রোগে অ্যান্টিবায়োটিকও চলে। অথচ হাতের কাছেই কিছু ভেষজ গাছ রয়েছে, যেগুলি অত্যন্ত অল্প দামে বা একটু খুঁজলে বিনামূল্যেও পাওয়া যায়। তেমনই একটি ভেষজ উদ্ভিদ থানকুনি। থানকুনি অতিপরিচিত পাতা। পুকুরপাড় বা জলাশয়ে হরহামেশাই পাওয়া যায়। চিকিত্সকরাই বলছেন, থানকুনি পাতার এমন ভেষজ গুণ রয়েছে, নিয়মিত খেতে পারলে, পেটের অসুখে কোনো দিন ভুগতে হবে না। শরীর-স্বাস্থ্য তো সতেজ থাকেই, ছোট থেকে খেতে পারলে বুদ্ধিরও বিকাশ হয়। নিচে থানকুনি পাতার ভেষজ গুণগুলি। ১) পেটের রোগ নির্মূল করতে থানকুনির বিকল্প নেই। নিয়মিত খেলে যে কোনও পেটের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পেট নিয়ে কোনো দিন সমস্যায় ভুগতে হয় না। শুধু পেটই নয়, আলসার, এগজিমা, হাঁপানি-সহ নানা চর্মরোগ সেরে যায় থানকুনি পাতা খেলে। ত্বকেও জেল্লা বাড়ে। ২) থানকুনি পাতায় থাকে Bacoside A ও B। Bacoside B মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে ও রক্ত চলাচল বাড়ায়। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। থানকুনি স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। মৃতকোষের ফলে চামড়ায় অনেক সময়ই শুষ্ক ছাল ওঠে। রুক্ষ হয়ে যায়। থানকুনি পাতার রস মৃতকোষগুলিকে পুনর্গঠন করে ত্বক মসৃণ করে দেয়। ৩) পুরনো ক্ষত কোনও ওষুধেই না সারলে, থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে তার পানি লাগালে সেরে যায়। সদ্য ক্ষতে থানকুনি পাতা বেটে লাগালে, ক্ষত নিরাময় হয়ে যায়। থানকুনি পাতা চুল পড়া আটকে দেয়। এমনকি নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। ৪) বয়স বাড়লেও, যৌবন ধরে রাখে থানকুনি পাতার রস। প্রতিদিন একগ্লাস দুধে ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে, চেহারায় লাবণ্য চলে আসে। আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যায়। দাঁতের রোগ সারাতেও থানকুনির জুড়ি মেলা ভার। মাড়ি থেকে রক্ত পড়লে বা দাঁতে ব্যথা করলে একটা বড় বাটিতে থানকুনি। পাতা সিদ্ধ করে, তারপর ছেঁকে নিয়ে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়।