বিশ্বে সামাজিক যোগাযোগের ব্যাপ্তি বাড়ছে। আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর (সোশ্যাল মিডিয়া) ব্যবহার দারুণভাবে বাড়ছে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর দিকে নজর দিচ্ছে। যেহেতু এসব মাধ্যমের ব্যবহারকারী বিভিন্ন বয়সের, তাই ব্যবসার ক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠানগুলোর নজর এই মাধ্যমের দিকে। বিপণনের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে এ মাধ্যম। ফলে তৈরি হচ্ছে চাকরির নতুন ক্ষেত্র। চাকরির পাশে আছে ব্যবসাও।
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, লিংকডইনের পাশাপাশি বর্তমানে ছবি শেয়ারের অ্যাপস ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্ট, লাইন ইত্যাদিতে সেবাগুলোতেও চলছে নানা কার্যক্রম। এসব মাধ্যমে কাজের ক্ষেত্র তৈরি হওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠানে এখন আছে ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিভাগ’। এসব বিভাগ থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয় উক্ত প্রতিষ্ঠানের সামাজিক যোগাযোগ কার্যক্রম।
বর্তমানে পেশা হিসেবে বেশ এগিয়ে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাজ করার এ বিষয়টি। ক্যারিয়ার হিসেবেও বাংলাদেশেও এখন বেশ জনপ্রিয় এ পেশা। চাইলে যে কেউ-ই এ পেশায় আসতে পারেন বলে জানালেন গ্রামীণফোনের ডিজিটাল ও সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের প্রধান জাকিয়া জেরিন। তাঁর মতে, সামাজিক যোগাযোগের বিষয়টি বাংলাদেশে দারুণভাবে এগিয়ে চলছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এদিকে নজর দিচ্ছে। যার কারণে এ খাতে বাড়ছে চাকরির সুযোগ। যাঁরা এ খাতে যুক্ত হতে চান, তাঁদের আসলে ডিজিটাল মিডিয়া বিষয়টির প্রতি আগ্রহ থাকতে হবে। তবেই ভালো করা সম্ভব। একই ধরনের মত দিলেন ডিজিটাল মিডিয়া এজেন্সি কুকিজারের সহযোগী পরিচালক দ্রাবিড় আলম। তাঁর মতে, নির্দিষ্ট কাজের বাইরে যাদের এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগ্রহ বেশি, তাঁরা চাইলেই নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এটাকে পেশা হিসেবে নিতে পারেন। এ মাধ্যমে কাজ করলে অনেক কিছুই শেখা সম্ভব। তিনি বলেন, ফেসবুক কিংবা অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমের নানা বিষয় ইন্টারনেটে আছে। সেগুলো পড়ে অনেক কিছু শেখা সম্ভব।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত সবাই জানেন কীভাবে এটা ব্যবহার করতে হয়। চাকরি কিংবা পেশা হিসেবে এ মাধ্যমকে নিতে চাইলে তাই এর চেয়ে বেশি কিছু জানতে হবে। এ জন্য এ মাধ্যমে যতটা যুক্ত থাকা যায়, ততই ভালো। কীভাবে এসব মাধ্যম ব্যবহার করে বিপণন, বিজ্ঞাপন, প্রচার ও প্রসারের কাজটি হয়, সেটি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। বাড়তি হিসেবে কিছুটা ডিজাইনের কাজ জানাটা এ পেশায় আপনাকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখবে। এ ক্ষেত্রে কাজ করতে চাইলে দুটি মাধ্যমেই করা যায় বলে জানালেন এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডের ডিজিটাল কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান রেফায়েত আহমেদ। তিনি জানান, কনটেন্ট তৈরি ও বিপণন—দুটি কাজই হয় এ খাতে। তাই দুটি বিষয়ের দিকেই নজর দেওয়া ভালো।
নিত্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সখ্য থাকাটা এ পেশায় জরুরি। নতুন যে সেবাটি আসছে কিংবা নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত হচ্ছে, সেটির সঙ্গে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি পরিবর্তন হওয়ায় সে অনুযায়ী নিজেকে তৈরি রাখা এ পেশায় বড় একটি চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অনেক বিজ্ঞাপন ও ইভেন্টভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা এ ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। চাইলে এসব প্রতিষ্ঠানেও এ পেশায় যুক্ত হওয়া সম্ভব। ডিজিটাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সলিউশন ৩৬০ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী রবিউল আলম বলেন, যেহেতু নতুন একটি মাধ্যম এবং সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও প্রযুক্তিভিত্তিক। তাই বলা চলে, এ খাতে ক্যারিয়ার গড়ার দারুণ সুযোগ রয়েছে। তবে নতুন এ বিষয়টিতে কাজ করতে চাইলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্ব বুঝতে হবে বলে জানান তিনি।
সাধারণ চাকরির বাইরে ভিন্ন একটি পেশা হিসেবে ইতিমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ খাতে ভালো করতে চাইলে ডিজিটাল মাধ্যমের প্রতি বাড়তি ভালো লাগা থাকাটা জরুরি। এ খাতের বিষয়টি এখনো নতুন হলেও ধীরে ধীরে বেড়েই চলছে এর চাহিদা ও জনপ্রিয়তা। শিগগিরই এ খাতে কাজের অনেক সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাই আগ্রহীরা এখনো তৈরি হতে পারেন।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.