অনেক সময় দেখা যায় শিশুদের অনেক দাঁতের অর্ধেকটা ভাঙা বা পোকায় খাওয়া৷ কিন্তু কেন এমনটা হয় বা এ বিষয়ে কীভাবে সচেতন হওয়া যায়, সে সম্পর্কে কিছু তথ্য দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷
শিশুদের ফোঁকলা দাঁত
প্রায় সব শিশুদেরই দাঁতের ক্ষয়রোগের সমস্যা হয়। দন্ত বিশেষজ্ঞ ইয়োখেন এইচ. স্মিড্ট বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে জার্মানিতে শতকরা ১০ জন শিশুই এই সমস্যায় ভুগছে৷ যদিও অন্যান্য দেশের শিশুদের এই দাঁতের ক্ষয়রোগের সমস্যা আরো বেশি৷ সচেতন হলে এই হার আরো কমতে পারে৷
কীভাবে বোঝা যায়?
শিশুরা প্রায়ই দাঁত ব্রাশ করার সময় বা ঠাণ্ডা অথবা গরম খাবার খাওয়া বা পান করার সময় তাদের অসুবিধার কথা জানায়৷ এছাড়াও অনেক সময়ই শিশুদের দাঁতের রঙ হয়ে থাকে হলুদ বা বাদামি৷ সাধারণত ছয় বছর বয়সের সময়ে শিশুদের দাঁতের এই রহস্যময় ক্ষয় রোগ দেখা দেয়৷
এর সম্ভাব্য কারণগুলো কী?
বহুদিন ধরেই এটা জানার চেষ্টা করছেন গবেষকরা৷ তাদের ধারণা, শিশু জন্মের আগে, অর্থাৎ শিশুটি পেটে থাকা অবস্থায় কিংবা জন্মের প্রথম বছর এ ক্ষতটি হয়ে থাকে৷ গবেষকদের মতে, হাম বা মাম্প-এর মতো কোনো সংক্রমণ রোগ থেকেও এ সমস্যা হতে পারে৷ এছাড়া ডাইঅক্সিনে দূষিত মায়ের দুধ খাওয়া থেকেও শিশুর দাঁত ভেঙে যাওয়া রোগ হতে পারে৷
গর্ভাবস্থায় সতর্কতা
সাধারণত শরীরে মিনারেলের অভাব থেকে শিশুদের দাঁত ভেঙে যেতে পারে৷ এমনকি গর্ভাবস্থায় বা শিশু জন্মের পরে মায়ের অ্যান্টিবায়োটিক সেবন কিংবা ফলিক অ্যাসিডের অভাবও হতে পারে এর কারণ৷ শতকরা ১০০ ভাগ সঠিক তথ্য অবশ্য আজও গবেষকদের অজানা৷ তাই অনাগত শিশুর স্বস্থ্যের কথা ভেবে গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মায়ের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি৷
রহস্যময় দাঁতের অসুখ
আমরা যাকে ‘পোঁকা খাওয়া’ দাঁত বলে থাকি, তা আসলে ততটা সমস্যাজনক না হলেও সমস্যাবিহীন নয়৷ তবে শিশুদের দন্তক্ষয় রোগ বেশিরভাগই ভেতরের দাঁতে হয়ে থাকে৷ সামনের দাঁতে এ রোগ হতে খুব কম দেখা যায়৷
কী করণীয়?
সাধারণত এক্ষেত্রে অসুস্থ দাঁতে সাময়িকভাবে ‘সিলিং’ লাগানো হয়ে থাকে, যা দাঁতের সংবেদনশীলতা এবং ক্ষয়ের ঝুঁকি কমায়৷ আর যদি দাঁতের বেশ খানিকটা অংশ নষ্ট হয়ে থাকে, তাহলে পুরো দাঁতটাই তুলে ফেলতে হয়৷ এ ব্যথা শিশুদের পক্ষে সহ্য করা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়৷
পুরোপুরি নিরাময় কি সম্ভব?
দাঁত বিশেষজ্ঞদের ঝটপট উত্তর ‘না’৷ তবে তাদের পরামর্শ, যত তাড়াতাড়ি শিশুদের এই রোগ ধরা যাবে এবং সঠিক চিকিৎসা ও সঠিক যত্ন নেয়া যাবে, তার ফল স্বাভাবিকভাবেই তত ভালো হবে৷ সারা বিশ্বেই শিশুদের দাঁতের এ রহস্যময় অসুখ নিয়ে গবেষণা চলছে৷ তবে এখনো এ নিয়ে ১০০ ভাগ প্রশ্নেরই সঠিক উত্তর মেলেনি৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে