বিয়ে একটি পারিবারিক বন্ধন। এই বন্ধনের মাধ্যমে সারা জীবন একসঙ্গে চলার পণ করে দুই হাত এক করে নেয়া হয়। দুইজন নারী ও পুরুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক এবং প্রণয়ের বৈধ আইনি চুক্তি ও তার স্বীকারোক্তি। বিবাহ সম্পূর্ণ হওয়ার পর শুরু হয় সংসার। ভবিষ্যতে পৃথিবীতে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আর সাংসার জীবনকে আঁটসাঁটে বাঁধতে প্রয়োজন সন্তানের। তবে অনেক দম্পতি বিয়ের পরই সন্তান নিতে চান না। সংসার গোছাতে আর নিজের ক্যারিয়ার গোছাতে সময় নিয়ে থাকেন।
গর্ভধারণ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে অনেক নারী বিভিন্ন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ খেয়ে থাকেন অথবা জন্মনিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। যা শরীরের জন্য অনেক সময় ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা ছাড়াও কিছুদিনের জন্য কীভাবে গর্ভধারণের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকা যায়- যে বিষয়ে পাঠকের জন্য কিছু পরামর্শ।
পিরিয়ড কী?
প্রতি চন্দ্রমাস পরপর হরমোনের প্রভাবে পরিণত মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনিপথে বের হয়ে আসে তাকেই ঋতুচক্র বলে। মাসিক চলাকালীন পেট ব্যথা, পিঠ ব্যথা, বমি বমি ভাব হতে পারে।
গর্ভধারণের ঝুঁকি এড়াতে
গর্ভধারণের বিষয়টি আসলে একটি হিসাবের সঙ্গে জড়িত। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় বলা যায় পিরিয়ড বা মাসিকের দিন থেকে ৭ দিন পর্যন্ত গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকে না। আবার অষ্টম দিন থেকে ১৭ দিন পর্যন্ত গর্ভধারণের মোক্ষম সময়। ১৮তম দিন থেকে পিরিয়ড হওয়া পর্যন্ত নিরাপদ সময়। অর্থাৎ পিরিয়ডের ৭ দিন আগে ও পরের সময় নিরাপদ। এ সময়ে গর্ভধারণ হয় না। মাঝামাঝি দিনগুলোতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
প্রাকৃতিক উপায়ে পরিবার পরিকল্পনা একটি পদ্ধতি, এই পদ্ধতিতে আপনি কোনোরকম জন্মনিরোধ পদ্ধতি ব্যবহার না করেই সহবাস করতে পারবেন। আসুন জেনে নেই গর্ভধারণের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়-
হিসাব ঠিক রাখুন
পিরিয়ডের হিসাব অবশ্যই ঠিক রাখতে হবে। ভুল গণনা করা যাবে না। মাসের এই সময়টা ভুল গণনা হলে আপনি গর্ভধারণ করতে পারেন।
দিনপুঞ্জিকায় দাগ দিন
বেশিরভাগ নারী পিরিয়ডের তারিখ ভুলে যান। তাই সঠিক সময়ে জানতে দিনপুঞ্জিকায় দাগ দিতে পারেন অথবা ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন।
পিরিয়ড চলাকালীন বাড়তি যত্ন নিন
পিরিয়ড চলাকালীন বেশিরভাগ নারী পেটব্যথা, বমিবমি ভাব, কোমর ব্যথা, মাথা ঘোড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই এই সে সময়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ও ভারী কাজ না কারা ও বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজন।
চার ঘণ্টার বেশি ন্যাপকিন ব্যবহার নয়
চার ঘণ্টার বেশি কোনোভাবেই ন্যাপকিন ব্যবহার করা যাবে না। এর ফলে চুলকানি, ফোঁড়া, ইনফেকশন হতে পারে।
মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ
স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনার সময় অবশ্যই মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ খেয়াল রাখতে হবে। কারণ মেয়াদোত্তীর্ণের ফলে এটির কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে এবং আপনার অসুস্থ হওয়ার স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এ বিষয়টি অতিরিক্ত গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।
বেদৌরা শারমিন, গাইনি কনসালটেন্ট, সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেড