চিটা হয়ে যেতে পারে উপকূলের ধান

এএসএম জসিম : নিম্নচাপের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন এবং কখনো মুষলধারে আবার কখনো গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে তীব্র শীতে অচল হয়ে পড়েছে বরগুনা পাথরঘাটাসহ উপকূলীয় এলাকার জনজীবন। ক্রমেই শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটেখাওয়া মানুষগুলো। শীতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে গ্রাম ও নদীপারের নারী ও শিশুরা।

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা, কাকচিড়া, কাঞ্চুরহাট, কামার হাট, চরদুয়ানী, কাঠালতলী, ছোটপাথরঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, তিন দিনের বৃষ্টিতে কৃষকের কাচা-পাকা ধান লুটিয়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকেরা ক্ষেতের পাকা ধান নিয়ে পড়েছেন চরম শঙ্কায়। বৃষ্টিতে ক্ষেতের পাকা ধান মাটির সাথে লুটিয়ে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঘরে তুলতে পারছে না পাকা ধান। আধা পাকা যে ধান রয়েছে, তা চিটা হয়ে যাবার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। বৃষ্টি বেশি হলে আলুসহ অন্যান্য শস্যেরও ক্ষতি হবার আশঙ্কা রয়েছে। অসময়ের এমন বৈরি আবহাওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। জনজীবনে নেমে এসেছে ভোগান্তি।

উপজেলার ছোট পাথরঘাটা গ্রামের কৃষক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি ১৫০ শতাংশ জমিতে ধান রোপন করেছি। এর মধ্যে ২০ শতাংশ জমির ধান ঘড়ে তুলতে পেরেছি। বাকি ধান বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার বেশির ভাগ জমির ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। যে ধান মাটিতে পড়ে গেছে সেগুলো অর্ধেকের বেশি চিটা হয়ে যাবে। এছাড়া বৃষ্টির পানি জমে সবজি পচে যাচ্ছে।

উপজেলার আমড়াতলা গ্রামের মো. মোস্তফা জানান, তার প্রায় ৬০ শতাংশ জমির অধিকাংশ ধান টানা-বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে পানির মধ্যে নুয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়া ধান চিটা হয়ে যাবে।

পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল জানান, পাথরঘাটায় সাড়ে ১২শ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের (মোটা) ধান চাষাবাদ হয়েছে। বৃষ্টিতে আপাতত বড় কোনো ক্ষতি না হলেও বর্তমানে ৩০ ভাগ ধান মাটিতে শুয়ে গেছে।

আবহাওয়া অফিস বলছে- সোমবার থেকে পর্যায়ক্রমে আবহাওয়া পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকবে। তবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে রোববার পর্যন্ত সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে রোববার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে- খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।

এছাড়া সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এটি উত্তর-পূর্ব দিকে আরো অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

Scroll to Top