টাইম স্কেল-সিলেকশন গ্রেডের পরিবর্তে আসছে ‘বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি ইনক্রিমেন্ট’!

সরকারি চাকরিজীবীদের আলোচিত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড- এর পরিবর্তে চক্রবৃদ্ধি হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার সুপারিশ করেছে পে-কমিশন রিপোর্ট পর্যালোচনাকারী সচিব কমিটি। বর্তমানে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের অধীনে সরকারি চাকুরিজীবীরা প্রমোশন ছাড়াই ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছেন।

নতুন বেতন কাঠামোর আওতায় কম সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ নেওয়ার সুবিধাও পাবেন সরকারি কর্মচারীরা। বেতন কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে সচিব কমিটি সরকারি চাকরিজীবীদের শতকরা ৫ ভাগ সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করেছে। চাকরিজীবীরা তাদের অন্তত তাদের ৫০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ হিসেবে নিতে পারবেন।

কর্মকর্তারা আশা করছেন এইসব বাস্তবায়িত হলে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুর্নীতি কমে আসবে।

জানা গেছে গত বুধবার সচিব কমিটির পক্ষ থেকে এর আহ্বায়ক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।

পে-কমিশন রিপোর্ট পর্যালোচনাকারী সচিব কমিটির একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি ইনক্রিমেন্ট পদ্ধতিতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা। তিনি জানান, ন্যাশনাল পে অ্যান্ড সার্ভিস কমিশন উচ্চ গ্রেডের চাকুরিজীবীদের বেতন ৪ শতাংশ হারে ও নিম্ন গ্রেডের চাকুরিজীবীদের বেতন বার্ষিক ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে।

তবে গৃহনির্মাণ ঋণ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তাদের উপকারে আসবে। তারা বর্তমানে গৃহনির্মাণ ঋণ হিসেবে মাত্র এক লাখ ৫০ হাজার টাকা পান। পর্যালোচনার কমিটির সুপারিশে সরকারি চাকুরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণের পরিমাণ অন্তত ৫০ মাসের বেতনের সমান করার সুপারিশ করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা বেশ কয়েকটি সুযোগ সুবিধাসহ বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি হারে ইনক্রিমেন্ট- এর সুপারিশ করেছে। শিগগিরই বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।

তবে সরকারি কর্মচারীরা বলছেন অন্য কথা। তারা জানান, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল হওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা বড় ধরনের আর্থিক লোকসানের মুখে পড়বেন।

সচিবালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অ্যাসোসিয়েশন জানায়, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেতন প্রায় শতভাগ বাড়ছে। আর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন বাড়ছে ৪৭ শতাংশ। এর মধ্যে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল হলে লাভের চেয়ে ক্ষতির পাল্লাই ভারী হবে বলে মনে করছেন তারা।

Exit mobile version