ঢাকায় হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে বান কি মুনের ঢাকা আসার প্রাথমিক সফরসূচি তৈরি হয়েছে।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২২ নভেম্বর দু’দিনের সফরে তিনি ঢাকা আসবেন বলে জানা গেছে।
২১ থেকে ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস ফর এইডস ইন এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক (আইসিএএপি বা আইক্যাপ)-এর ১২তম সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য এর আগেই বান কি মুনকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তার সম্মতি অনুযায়ী খসড়া সফরসূচিতে বিষয়টি চলতি সপ্তাহে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায়।
সর্বশেষ ২০১১ সালের নভেম্বরে বান কি মুন ঢাকা আসেন। নারী ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ২০১০ সালে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের উদ্যোগে শুরু হওয়া ‘এভরি উইমেন এভরি চাইল্ড’ কর্মসূচি’তে অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের নারী ও শিশু স্বাস্থ্য সেবার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে বান কি মুন ঢাকা আসেন। এর আগে ২০০৮ সালের ১ নভেম্বর দিকে তিনি মহাসচিব হিসেবে প্রথম ঢাকায় এসেছিলেন। সেবার দেশের রাজনৈতিক গতিপ্রবাহে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
নয়াদিল্লিতে দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। বান কি মুনের আগে জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে কুর্ট ওয়ার্ল্ডহেইম, হ্যাভিয়ার পেরেজ দ্য কুইয়্যার ও কফি আনান বাংলাদেশ সফর করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকায় আইক্যাপের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ শুরু হয়েছিল দুই বছর আগে। ভারত ও মিয়ানমারের মতো দেশকে টপকে বাংলাদেশকে এ সম্মেলন আয়োজনের সম্মান অর্জন করতে হয়। সম্মেলনে ২৬টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ প্রায় তিন হাজার বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০ থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক সম্মেলন হিসেবে রেকর্ডে স্থান করে নেবে। সর্বশেষ জাতিসংঘ মহাসচিবের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত এই সম্মেলন ও বাংলাদেশের নামকে আরো উজ্জল করবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আন্তঃসরকারি প্রতিষ্ঠান পার্টনারস ইন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি)কে সঙ্গে নিয়ে এই সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে। এছাড়া এই আয়োজনের সঙ্গে থাকছে ইউএন-এইডস, আইসিডিডিআর’বি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, পিএল এইচআইভি নেটওয়ার্ক, এসটিআই নেটওয়ার্ক এবং বন্ধু ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।
প্রতি দুই বছর পর পর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে এ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়। আইক্যাপ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এইচআইভি/এইডস সম্পর্কিত সবচেয়ে বড় ফোরাম। এ ফোরাম গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলসহ সারাবিশ্বে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক অঙ্গীকার অর্জন, এডভোকেসি, নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ ও এইচআইভি/এইডস সম্পর্কিত সচেতনতায় মূল ভূমিকা পালন করছে।