তথ্য প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে গ্রেফতারের বিষয়টি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
সচিবালয়ে সমসামরিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় প্রবীর সিকদারকে পর্যাপ্ত আইনি সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রণালয় নজর রাখবে বলেও মন্ত্রী জানান।
এ ছাড়া এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন ‘সাংবাদিকদের স্বাধীন লেখালেখিতে বাধা দিতে কোনো আইন সরকার করেনি। ভবিষ্যতেও করবে না।’
জীবন শঙ্কা নিয়ে সম্প্রতি ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রবীর সিকদার স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নাম উল্লেখ করেন। এতে মন্ত্রীর মর্যাদা হানি হয়েছে এমন অভিযোগ এনে রবিবার রাত ১১টার দিকে ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ওই মামলা করা হয়। মামলাটি করেন ফরিদপুরের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) স্বপন পাল।
এদিকে সম্প্রতি নির্বাচন নিয়ে বিএনপি, নাগরিক সমাজ ও উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে আলোচনা হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘এখন নির্বাচন নিয়ে আলোচনার মৌসুম নয়। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ থেকে দেশকে রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ করার সময় এখন। অপশক্তি থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করাই এখন রাজনীতির মূল বিষয়।’
উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ধানক্ষেতের পরিচর্যার জন্য বিভিন্ন পর্যায় থাকে। যেমন, সেচ দেওয়ার সময়, সার দেওয়ার সময়, নিড়ানি দেওয়ার সময়। আর মাজরা পোকা যদি আক্রমণ করে তাহলে পোকা দমন করার সময়। নিড়ানির সময় সার দেবেন, সেচ দেওয়ার সময় সার দেবেন, এভাবে তো ধানের ফলন ভালো হবে না।’
খালেদা জিয়ার উদ্দেশে ইনু বলেন, ‘তিনি এত মাজরা পোকা উৎপাদন করেছেন যে উনার ধানের শীষ খেয়ে ফেলছে সেই মাজরা পোকারা। এখন মাজরা থেকে ধানক্ষেত রক্ষার সময়। মাজরা পোকা বা যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে কাজের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে সুসংহত করার সময় এটা। নতুন নির্বাচনের দাবি জানানোর সময় এটা নয়।’
খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আসুন আগে সংবিধান, রাজনীতি ও গণতন্ত্রকে যুদ্ধাপরাধীদের কবল থেকে মুক্ত করি। প্রথমে এসব অপশক্তির হাত থেকে দেশকে নিরাপদ করতে হবে। এরপর প্রতিদিন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে পারব।’
গণতন্ত্রে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার জন্য সংবিধান সংশোধন করার জন্য দেওয়া নাগরিক সমাজের প্রস্তাবকে রহস্যজনক উল্লেখ করে ইনু বলেন, ‘এই মুহূর্তে গণতন্ত্রের কোন জায়গাটায় ভারসাম্যহীনতা আছে তা একটু জানালে উপকৃত হতাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রস্তাবগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কেমন জানি একটি অস্বাভাবিক রাজনৈতিক ক্ষেত্র তৈরির চক্রান্ত বলে মনে হচ্ছে।’
নির্বাচন এবং সংবিধান সংশোধনের দাবির আড়ালে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য এবং অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে দেশে অসাংবিধানিক সরকার আনার ষড়যন্ত্র, চক্রান্তের বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী।