বিদায়ী সেনাপ্রধানকে গার্ড অব অনার

বর্ণাঢ্য ও গৌরবময় সেনাজীবন থেকে অবসরে যাচ্ছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা সেনানিবাসের শিখা চিরন্তনে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন তিনি। এরপর সকাল পৌনে ১০টার দিকে সেনাকুঞ্জে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নতুন সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হকের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া। শফিউল হক সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব থেকে পদোন্নতি পেয়ে সেনাপ্রধান হয়েছেন।

২০১২ সালের এ দিনে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল মুবীনের কাছ থেকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ইকবাল করিম ভূঁইয়া। ২০১০ সালের মে মাসে তিনি পদোন্নতি পেয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হন। প্রায় চার দশকের পেশাগত জীবনে সেনাবাহিনীকে কর্মোদ্দীপ্ত করেছেন ইকবাল করিম ভূঁইয়া। এ বাহিনীর সুযোগ-সুবিধা, মর্যাদা ও গুণ বাড়াতে সব চেষ্টাই তিনি করেছেন। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, রেশন, আবাসন, জেসিওদের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার পদমর্যাদা বিষয়ে তার অবদান অনস্বীকার্য।

এ ছাড়া কাজের বিচারে বীর-সাহসীদের জন্য প্রচলন করেছেন নতুন নতুন পদক, এককালীন অনুদান ও ভাতা ব্যবস্থা। জাতিসংঘ প্রতিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বর্তমান অবস্থান বেশ মর্যাদাপূর্ণ। আর সেটি ইকবাল করিম ভূঁইয়ার বিশেষ অবদান ও চেষ্টায় সম্ভব হয়েছে। তিনি সৈনিক ও অফিসারদের প্রশিক্ষণেও বিশেষ গুরুত্ব দেন। মেসে থাকা সৈনিক ও সিএমএইচে ভর্তি রোগীদের খাবারের মান উন্নয়নে কাজ করেন তিনি। সামরিক হাসপাতালগুলোয় প্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণ, বহির্বিভাগ, ওয়ার্ড ও শয্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করেন তিনি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জনবল সংকট নিরসন, সব স্তরের সেনাসদস্যের পারিবারিক পেনশনের হার বাড়ানো- এসব ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা অনেক।

এ ছাড়া সেনাবাহিনীর এভিয়েশন ইউনিটের বৈমানিকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো, কমান্ডো-প্যারাকমান্ডো সদস্যদের উড্ডয়ন ঝুঁকি বিমার আওতায় আনা, নতুন বেতন-স্কেল প্রণয়নে তার ভূমিকার প্রশংসা রয়েছে অনেক। জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়ার জন্ম ১৯৫৭ সালের ২ জুন, কুমিল্লায়। কুমিল্লা জিলা স্কুল এবং ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে তার পড়ালেখা। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন পান ইকবাল করিম ভূঁইয়া। নবম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়কের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে কুয়েত সরকার তাকে লিবারেশন অব কুয়েত মেডেল প্রদান করে।

Exit mobile version