সাভারের আশুলিয়ায় ফিল্মি স্টাইলে ব্যাংকে ডাকাতিকালে হামলায় ম্যানেজার, গ্রাহক ও এলাকাবাসীসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। এরমধ্যে এক ডাকাত নিহত হয়েছে গণপিটুনিতে। আহত হয়েছে আরো অন্তত ১১ জন।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের আশুলিয়ার কাঠকড়া শাখায় এ দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ব্যাংক ম্যানেজার ওয়ালিউল্লাহ (৪৫), মনির (৬০), জিল্লুর রহমান (৪০), গ্রাহক পলাশ (৩৮), নিরাপত্তা প্রহরী বদরুল (৩৮) ও অজ্ঞাতনামা এক ডাকাত। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের লাশ উদ্ধার করেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর তিনটার দিকে ৮-১০ জনের একদল ডাকাত অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার হাজী নজিমউদ্দিন সুপার মার্কেটে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজার শাখায় প্রবেশ করে। পরে তারা ওই ব্যাংকের সব কর্মকর্তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ প্রায় ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় ব্যাংক কর্মকর্তারা বাধা দিলে ডাকতারা ব্যাংক ম্যানেজার ওলিউল্লাহসহ ৫ জনকে কুপিয়ে জখম করে।
এদিকে ডাকাতির খবর শুনে এলাকাবাসী স্থানীয় বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে ডাকতরা দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারা এলাকাবাসীকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ককটেল ও গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটনায়। এতে স্থানীয় চারজন গুলিবিদ্ধসহ এগারজন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ব্যাংক কর্মকর্তা, গ্রাহক, নিরাপত্তা প্রহরী ও স্থানীয়সহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, ডাকাতির পর মোটরসাইকেলে করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া সময় কাঠগড়া বাজার এলাকার পার্শ্ববর্তী আমতলা এলাকার জিরাবো-বিশমাইল সড়ক থেকে ডাকাত দলের এক সদস্য ও দুর্গাপুর এলাকা থেকে দুই সদস্যকে আটক করে এলাকাবাসী। এসময় স্থানীয়দের গণপিটুনিতে ডাকাতদলের এক সদস্য ঘটনাস্থলেই মারা যান।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদলের অপর সদস্যকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে এলাকবাসীর সংঘর্ষ হয়। এসময় উত্তেজিত এলাকাবাসী পুলিশের দুটি গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ডাকাত দলের এক সদস্যকে উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করে।
এব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল ছয়জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৫টি ককটেল ও গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে।