আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটাররা যাতে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেন তার অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউ’র এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভোটারদের অবশ্যই স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে হবে। বাংলাদেশে আবারও সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে- এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপের ২৮ দেশের এই জোট। সিটি করপোরেশন নির্বাচন দৃশ্যত বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের গত তিন মাসের বেশি সময়ের সহিংস অবরোধের ইতি টেনেছে।
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি জোট চলতি বছরের শুরুতে লাগাতার অবরোধের ডাক দেয়। প্রায় তিন মাস তাদের অবরোধের মধ্যে হরতালে গাড়িতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগ ও হাতবোমা বিস্ফোরণে ১৩০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। আগুনে দগ্ধ হন কয়েক শ মানুষ। এরই মধ্যে গত মাসে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তাতে প্রার্থীদের সমর্থন দেয় বিএনপি। দল সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারে নেমেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও। তবে গত সপ্তাহে নির্বাচনী প্রচারে কয়েক দফায় খালেদার গাড়িবহরে হামলা হয়, যার জন্য ক্ষমতাসীনদের দায়ী করছে বিএনপি।
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, অবরোধে পেট্রলবোমায় হতাহত এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষোভ থেকেই বিএনপি নেত্রীর ওপর হামলা চালিয়েছে। এদিকে গাড়িবহর নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটিয়ে খালেদা জিয়া আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন বলে এ বিষয়ে তাকে সতর্ক করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পুলিশকেও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছি। বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক উন্নয়নে সব রাজনৈতিক পক্ষের সহিংসতার অবসান ও উত্তেজনা প্রশমনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের পাশাপাশি গঠনমূলক আচরণ করা উচিত।