বিএনপি নেতা সালাহউদ্দীন আহমেদ তার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া দুজন আত্মীয়কে জানিয়েছেন, তাঁকে চোখ বাঁধা অবস্থায় কয়েকবার গাড়ি বদল করে শিলং নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শিলং এর পলোগ্রাউন্ডে তাঁকে চোখ বাঁধা অবস্থাতেই গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। চোখের বাঁধন খোলার পরও তিনি বুঝতে পারছিলেন না তিনি কোথায় আছেন। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করে তিনি জানতে পারেন যে, তিনি শিলং এ আছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সালাহউদ্দীন আহমেদের এই দুজন আত্মীয় প্রথমবারের মতো তার সঙ্গে শিলং এর সিভিল হাসপাতালে দেখা করতে সক্ষম হন। সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে এসে তারা বিবিসি বাংলার অমিতাভ ভট্টশালীকে এই তথ্য জানান। এদের একজন আইয়ুব আলী জানান, তিনি কলকাতার বাসিন্দা এবং সালাউদ্দীন আহমেদের দূর সম্পর্কের ভাই।
এই দুজন আরও জানিয়েছেন, সালাহউদ্দীন আহমেদ নিজেই এর পর শিলং এর পুলিশের কাছে গিয়ে নিজের পরিচয় দেন। এর আগে গত দুদিন ধরে শিলং এর পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছিল, স্থানীয় লোকজন সালাহউদ্দীন আহমেদকে উদভ্রান্তের মতো ঘুরতে দেখে থানায় খবর দেয়। এরপর পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশে দুমাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ সালাউদ্দীন আহমেদকে শিলং এ খুঁজে পাওয়ার পর এই প্রথম তার নিজস্ব বয়ানে কোন তথ্য জানা গেল। শিলং পুলিশ গত কদিন ধরে তাকে কঠোর পাহারার মধ্যে রেখেছে। এমনকি যেসব ডাক্তার, নার্স সালাউদ্দীন আহমেদকে দেখেছেন, তারাও মিস্টার আহমেদের স্বাস্থ্য ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে কোন তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।
তবে শিলং এর একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ডি জে গোস্বামী জানিয়েছেন, সালাহউদ্দীন আহমেদের কাছে কিছু ওষুধ পাওয়া গিয়েছিল, যেগুলো বাংলাদেশের কোন ওষুধ কোম্পানির তৈরি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ এসব ওষুধের স্ট্রীপে বাংলা লেখা ছিল। ভারতে তৈরি ওষুধের স্ট্রীপে বাংলা লেখা থাকে না।
ডাক্তার ডি জে গোস্বামী জানান, সালাহউদ্দীন আহমেদ হৃদরোগে এবং প্রোস্টেটের জটিলতায় ভুগছেন। তার সঙ্গে পাওয়া ওষুধগুলো মূলত এসব রোগের।
মেঘালয় পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের দুজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বিকেলে সালাহউদ্দীন আহমেদকে প্রায় দু ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে তারা কি জানতে পেরেছেন তা প্রকাশ করেন নি।
সালাহউদ্দীন আহমদের সঙ্গে দেখা করতে তার পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার শিলং এ পৌঁছান। এদের একজন হুমায়ুন রশিদ জানিয়েছেন, তিনি সালাহউদ্দীন আহমেদের কাজিন। সালাউদ্দীন আহমেদের সঙ্গে তাদেরকে দেখা করার অনুমতি দিয়েছিলেন শিলং এর পুলিশের এসপি। কিন্তু পরে সেই অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। দেখা করতে না পেরে তারা ফিরে যান।
আবদুল লতিফ জনি এবং স্বপন নামে বিএনপির দুজন নেতাও শিলং এ পৌঁছেছেন।