বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মারধর করার অপরাধে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(বুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শুভ্র জ্যোতি টিকাদার এবং সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনককে বুয়েট থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য আরো দুইজনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নিশ্চিত করেছে। সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদেরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বুয়েট শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মারধর করা এবং এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট, ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য চার ছাত্রকে বহিষ্কার করা হলো বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বুয়েট ভিসি অধ্যাপক ড. খালেদা ইকরাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করার কারণে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।
এ ব্যাপারে বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. হাসিব চৌধুরী জানান, গত ১৮ ও ১৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কমিটির অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় দোষী চার ছাত্রের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সোমবার রাতে চিঠির মাধ্যমে বহিষ্কারের বিষয়টি চার ছাত্রকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনক বলেন, এটা খুবই অন্যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করবো। আর প্রশাসনকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেব।
যদি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনে যাবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ এপ্রিল জামায়াতের সিনিয়র সহকারী-সেক্রেটারি জেনারেল মো. কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়ের বিষয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন বুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম। স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মারধর করে। এ নিয়ে বুয়েট শিক্ষক সমিতি ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও অবস্থান নেয়। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বুয়েটের শিক্ষার কার্যক্রম।