দিন শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ২৩৬ / ৪

প্রথম দুই সেশনে একটি করে উইকেট পতন। শেষ সেশনে আরও দুটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। একটি আবার দিনের শেষ বলে। সেটি মুমিনুল হকের উইকেট। শেষ বলে আউট হয়ে মুমিনুল যেমন দিনের আক্ষেপের কারণ, তেমনি খুলনা টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশের অর্জনের উৎসও কক্সবাজারের এই তরুণ।

ক্যারিয়ারের নবম হাফ সেঞ্চুরি দিয়ে মুমিনুল টেস্টে টানা দশ ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন। টেস্ট ইতিহাসের এই পাতায় মুমিনুলের পাশে শোভা পাচ্ছে শচিন টেন্ডুলকারের নাম। আক্ষেপ আর তৃপ্তির দিনে ৮৯.৫ ওভার ব্যাট করে বাংলাদেশ চার উইকেটে ২৩৬ রান করেছে। সাকিব আল হাসান ১৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন।

দিনের প্রথম সেশনে দুদল সমঅবস্থানেই ছিল। টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ তুলেছিল ৬০ রান। পাকিস্তানের সফলতার কারণ ছিলেন তামিম ইকবাল। ৫২ রানে বিচ্ছিন্ন হয় বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। ব্যক্তিগত ১৬ রানে জীবন পাওয়া তামিমকে ফিরিয়েছেন লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ। ২৫ রান করেন তিনি। তৃতীয় বলেই ইমরুলের বিপক্ষে রিভিউ নিয়ে বিফল হয়েছিল পাকিস্তান। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ওয়াহাব রিয়াজ, জুনায়েদরা ক্রমাগত শর্ট বল করে গেছেন। তবে সেগুলো ফল পায়নি। সকালে রোদ-বৃষ্টির হালকা নাটক পেরিয়ে নবম ওভারে প্রথম চার আসে বাংলাদেশের, ইমরুলের ব্যাট থেকে। ছক্কা মারতে গিয়ে একবার বেঁচে যান ইমরুলও।

লাঞ্চের পর ব্যাট করতে এসে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ইমরুল। দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুলের সঙ্গে তার ৪০ রানের জুটি ভাঙেন হাফিজ। রান খরায় থাকায় ইমরুল ৫১ রান করে কট এন্ড বোল্ড হন। তারপর মুমিনুল-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে দ্বিতীয় সেশনে ৯০ রান যোগ করে বাংলাদেশ। দুজনেই স্বাবলীল ব্যাটিংয়ে হতাশ করেন পাকিস্তানের বোলারদের।

টেস্ট ক্রিকেটে দেশের আস্থার প্রতীক মুমিনুলের ব্যাট এদিনও স্বমহিমায় ভাস্বর হয়েছে। চা বিরতির পর ক্যারিয়ারের নবম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল। যা তাকে পাইয়ে দেয় টানা দশ টেস্টে হাফ সেঞ্চুরির অনন্য কৃতিত্ব। বাংলাদেশি এই তরুণ ছাড়া টেস্ট ইতিহাসে টানা দশ টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি আছে শচিন টেন্ডুলকার ও ইংল্যান্ডের জন এড্রিচের। টানা ১১ টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি আছে ভিভ রিচার্ডস, শেবাগ ও গম্ভীরের। সর্বোচ্চ টানা ১২ টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি আছে ডি ভিলিয়ার্সের।

তবে দিনের তৃতীয় সেশনেও উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে রান না পেলেও মুমিনুলের সঙ্গে ভালোই ব্যাটিং করছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু এক রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। মুমিনুলের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৯৫ রান যোগ করা মাহমুদউল্লাহ ৪৯ রান করে ওয়াহাব রিয়াজের শিকার হন। এই সেশনেও মুমিনুলের বিরুদ্ধে একটি রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয় পাকিস্তান।

শেষ বেলায় ড্রেসিংরুমে পাকিস্তান ফিরেছে হাসিমুখেই। দিনের শেষ বলে মুমিনুল এলবির ফাঁদে পড়েন জুলফিকার বাবরের বলে। রিভিউ নিলেও মুমিনুলের রক্ষা হয়নি। তার আউটেই শেষ হয় দিনের খেলা। সেঞ্চুরিটা দৃষ্টিসীমায় থাকলেও ১৬২ বলে আটটি চারে ৮০ রানের ইনিংস খেলেই থামেন মুমিনুল। সাকিবের সঙ্গে তিনি ৪৯ রানের জুটি গড়েন। পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজ, হাফিজ, জুলফিকার বাবর ও ইয়াসির শাহ একটি করে উইকেট নেন।

Scroll to Top