হার দিয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

22

মিরপুরের মন্থর উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪৯ রানের লক্ষ্য কঠিন হলেও অসম্ভব ছিল না। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় তার ধারে কাছেও যেতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বড় ব্যবধানে হেরে সিরিজ শুরু করেছে স্বাগতিকরা।
রোববার বাংলাদেশকে ৫২ রানে হারিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসির অপরাজিত অর্ধশতকে ৪ উইকেটে ১৪৮ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ৭ বল বাকি থাকতে ৯৬ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম দুই ওভারেই তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের বিদায়ে শুরুতেই দিক হারায় বাংলাদেশ। কাইল অ্যাবটের প্রথম ওভারের শেষ বলে লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসবন্দি হন তামিম। পরের ওভারে কাগিসো রাবাদার বলে সীমানায় জেপি দুমিনিকে ক্যাচ দেন সৌম্য।

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের ৩৭ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশ। উচ্চাভিলাষী শট খেলতে গিয়ে মুশফিকের বিদায়ে তৃতীয় উইকেট জুটি ভাঙার পর আবার দিক হারায় স্বাগতিকরা।

সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন দ্রুত ফিরে গেলে আর কক্ষপথে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। চেষ্টা করেছিলেন সাকিব, কিন্তু ২৬ রানেই থামে তার প্রচেষ্টা। এরপর অধিনায়ক মাশরাফি ফিরে গেলে স্বাগতিকদের বড় হার অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়।

অভিষিক্ত লিটন দাসের ব্যাট থেকে আসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ রানের ইনিংস। তার বিদায়ের পর বেশি দূর এগোয়নি স্বাগতিকদের সংগ্রহ। সাকিব, মুশফিক ও লিটন ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কেই যেতে পারেননি।

এর আগে মাশরাফি অধিনায়ক হওয়ার পর এই প্রথম দুই পেসার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ওভারে প্রথম পেসার হিসেবে মুস্তাফিজকে বোলিংয়ে আনেন মাশরাফি। এই বাঁহাতি পেসার কোনো উইকেট না পেলেও ভালো বোলিং করেন।

স্পিন দিয়ে বোলিং শুরু করা বাংলাদেশ প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেয় বিপজ্জনক এবি ডি ভিলিয়ার্সকে। ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা ডি ভিলিয়ার্সকে মাশরাফির ক্যাচে পরিণত করেন আরাফাত সানি। চতুর্থ ওভারে নাসির ফেরান ডি কককে।

৩১ রানে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা প্রতিরোধ গড়ে দু প্লেসি ও দুমিনির ব্যাটে। দ্বাদশ ওভারে বোলিংয়ে ফিরে বিপজ্জনক হয়ে উঠা ৪৬ রানের জুটি ভাঙেন সানি। তার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন দুমিনি।

দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে ডেভিড মিলারকে ফেরান সাকিব। এই উইকেট নিয়ে আব্দুর রাজ্জাককে পেছনে ফেলেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারের।

৯০ রানে মিলারের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন রাইলি রুশো। অধিনায়কের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়ে দলকে দেড়শ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান তিনি। ২১ বলে দুটি করে চার ও ছক্কার সাহায্যে ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন রুশো।

সর্বোচ্চ ৭৯ রানে অপরাজিত থাকেন দু প্লেসি। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কের ৬১ বলের ইনিংসটি গড়া ৮টি চারে। ব্যক্তিগত ১৮ রানে মুস্তাফিজের বলে মুশফিককে দুরূহ একটি সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি।

১৯ রানে দুই উইকেট নিয়ে সানি বাংলাদেশের সেরা বোলার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৪৮/৪ (ডি ভিলিয়ার্স ২, ডি কক ১২, দু প্লেসি ৭৯*, দুমিনি ১৮, মিলার ১, রুশো ৩১*; সানি ২/১৯, সাকিব ১/২৪, নাসির ১/৩৭)

বাংলাদেশ: ১৮.৫ ওভারে ৯৬ (তামিম ৫, সৌম্য ৭, সাকিব ২৬, মুশফিক ১৭, সাব্বির ৪, নাসির ১, লিটন ২২, মাশরাফি ৫, সোহাগ ৩, সানি ১*, মুস্তাফিজ ১; দুমিনি ২/১১, ভিজে ২/১২, রাবাদা ২/২৮, অ্যাবট ১/১০, পার্নেল ১/১২, ফাঙ্গিসো ১/২১)

ম্যাচ সেরা: ফাফ দু প্লেসি