মঙ্গলবার ভারতীয় বাংলা সংবাদ পেপার আনন্দবাজার পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে জগমোহন ডালমিয়া নির্বাচন করেছেন রাজীব শুক্লাকে।
এতেই ডালমিয়া থেকে নেই। শুক্লাকে চেয়ারম্যান বানিয়ে আর আইপিএলে শ্রীনিবাসনের সাজানো রাজ্য এলোমেলো করে দিয়েছেন জগমোহন ডালমিয়া। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) সভাপতির পদ থেকে সরে যেতে হয়েছে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনকে।
বোর্ড নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করা জগমোহন ডালমিয়াকে সে পদে বসিয়ে শ্রীনি ভেবেছিলেন পেছন থেকেই কলকাঠিটা তিনিই নাড়বেন। কিন্তু শ্রীনিবাসন যে কতটা ভুল করেছিলেন, সেটা তিনি এই মুহূর্তে ভালো করে বুঝতে পারছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আইপিএল চেয়ারম্যানের পদে রাজীব শুক্লাকে বসিয়েই ক্ষান্ত দেননি ডালমিয়া। অর্থকরী এই প্রতিযোগিতার দুই ‘লোভনীয়’ পদ ফিন্যান্স ও মার্কেটিং কমিটির সভাপতির পদেও ডালমিয়া বসিয়েছেন শ্রীনির কট্টর বিরোধী দুই ব্যক্তিকে। সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিকে টেকনিক্যাল কমিটির প্রধানের পদ থেকে আগে সরিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীনিবাসন।
ডালমিয়া সৌরভকে ফিরিয়ে এনেছেন এই কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবে। এই কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথকে। কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার এ সবকিছুকেই দেখছে শ্রীনির বিরুদ্ধে ডালমিয়ার লড়াই হিসেবে।
আনন্দবাজার আরো জানিয়েছে, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের পর থেকে আইসিসির সদ্য পদত্যাগী সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল যেসব মন্তব্য করেছেন, তারই পরিপ্রেক্ষিতে আসছে জুনে ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর এক্ষুনি বাতিল করে দিতে চেয়েছিলেন শ্রীনিবাসন। কিন্তু ডালমিয়া নাকি তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো এই পরিস্থিতিতে ডালমিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর পুরোনো সম্পর্কই বহাল রাখার সিদ্ধান্তটা নাকি এক প্রকার নিয়ে রেখেছেন। সম্প্রতি সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সঙ্গে প্রীতিভোজ নাকি বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করার একটা বার্তাই।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যারিবীয় তারকা সুনীল নারাইন যাতে আইপিএল খেলতে না পারেন, এনিয়েও নাকি পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছিলেন প্রতি হিংসা পরায়ণ শ্রীনি। ডালমিয়া তাঁর বোলিং অ্যাকশনের ছাড়পত্র দিয়ে নিশ্চিত করেছেন তাঁর আইপিএল খেলা। ডালমিয়ার এই লড়াইয়ে শ্রীনিবাসন ভেতরে ভেতরে ফুঁসছেন।
সম্প্রতি শ্রীনি নাকি ডালমিয়াকে টেলিফোন করে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার হুমকি দেন। বিসিসিআইয়ের সাবেক প্রধানের এই হুমকিতে নাকি একেবারেই বিচলিত নন বর্তমান প্রধান ডালমিয়া। কারণ, বোর্ডে নিজের অনুগামী পাঁচ পরিচালককে দিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারলেও সেই প্রস্তাব পাশ করানোর জন্য দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পাওয়ার নাকি কোনোই সম্ভাবনা নেই শ্রীনির অনুসারীদের। ভারতীয় বোর্ডের বর্তমান সচিব অনুরাগ ঠাকুর নাকি পুরোপুরিই ডালমিয়ার সাথে।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তের পরিস্থিতি পুরোপুরি শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধেই। এমন চলতে থাকলে খুব দ্রুতই আইসিসির চেয়ারম্যান পদ হারাতে হতে পারে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনকে বলে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে।