কোথায় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’তে দুই চিরশত্রুর মধ্যে ‘মিল-মহব্বত’ দেখা যাবে তা নয়, সেই লড়াই-ই জারি। উপায় নেই, বিশ্বকাপ ক্রিকেট বলে কথা। আজ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অন্যতম স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া লড়বে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসে, গ্যালারি উপচে পড়া ৯০ হাজার দর্শকের সামনে ব্যাটে-বলে ধুন্ধুমার লড়াই। এই না হলে বিশ্বকাপ!
বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগে অস্ট্রেলিয়াকেই মনে হচ্ছে, ঠেকানোর কোনো উপায় নেই। ট্রফিটা আরও একবার অজিদের দখলে গেল বলে। শুধু ঘরের মাঠ বলেই নয়, সর্বশেষ পারফরম্যান্সও অজিদের হয়ে কথা বলছে। ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে ভারতকে উড়িয়ে দেওয়ার পর, ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজেও অনায়াস চ্যাম্পিয়ন। যাতে বাকি দুই দল ভারত এবং ইংল্যান্ড পাত্তাই পায়নি। ফাইনালসহ তিন ম্যাচেই ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে অজিরা।
ওই টুর্নামেন্ট স্বাগতিকরা জিতেছে নিয়মিত অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ককে ছাড়াই। যিনি আজও দর্শক। টিম ম্যানেজমেন্ট তার ফিটনেস নিয়ে এখনও ঝুঁকি নিতে নারাজ। যদিও আমিরাতের বিপক্ষে সর্বশেষ প্রস্তুতি ম্যাচটা তিনি খেলেছেন। সর্বোচ্চ ৬৪ রান করার পাশাপাশি দুই ওভার বোলিং এবং ফিল্ডিং তো করেছেনই। তারপরও আজ ক্লার্ক আউট। তাই ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে অধিনায়ক জর্জ বেইলিই।
কেন অজিরা ফেভারিট? কারণ দুরন্ত ব্যাটিং লাইনআপ, একাধিক ম্যাচ উইনিং অলরাউন্ডার এবং সম্ভবত বিশ্বকাপের সেরা গতির পেস স্কোয়াড। ঘাটতি শুধু জেনুইন স্পিনারের অভাব। সেটা কি বিশ্বকাপে অজিদের ‘অ্যাকিলিস হিল’ হতে পারে? সময়ই তার জবাব দেবে। ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চ মিলে ভয়ঙ্কর ওপেনিং জুটি। তিনে শেন ওয়াটসন। চারে এ সময়ে অজিদের সেরা তারকা স্টিভেন স্মিথ। বেইলি থাকবেন তারপরই। এখন দেখুন অলরাউন্ডারদের তালিকা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মিচেল মার্শ। প্রথমজন ব্যাটে ঝড় তোলেন, স্পিনেও হাত ঘোরান। আর দ্বিতীয়জন পেসার-অলরাউন্ডার। এদের সঙ্গে ব্যাকআপ বোলিং করে দিতে পারবেন ওয়াটসনও। নিজেদের দিনে এদের যেকেউ ম্যাচ উইনার। জেমস ফকনার ইনজুরির কারণে সঙ্গী হয়েছেন ক্লার্কের। নইলে এ তালিকা আরও লম্বা হতো। মিচেল জনসন, মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজেলউড মিলে দুরন্ত পেস আক্রমণ। অজিদের পাল্লা যে ভারি, সেকি আর এমনিতেই!
তবে বিশ্বকাপ মানেই অন্যরকম খেলা। কাজেই ইংল্যান্ডকে খুব বেশি পিছিয়ে রাখার সুযোগ কই? নিচ থেকে দেখুন, ইংল্যান্ডের বোলিংটা অজিদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতোই। জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রড, স্টিভেন ফিন ও ক্রিস ওকসকে নিয়ে গড়া পেস আক্রমণ এক কথায় দুর্দান্ত। আর ব্যাটিং? শুরুতে ইয়ান বেল-মঈন আলি। বেল ধরেন, মঈন মারেন। পরের স্লটে জেমস টেলর ও অধিনায়ক ইয়ন মরগান। ইংল্যান্ডকে বড় রান পেতে হলে এ দুইজনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। অলরাউন্ডারে এসেই ইংলিশদের সমস্যা। মোটেই ফর্মে নেই রবি বোপারা। তাই বাড়তি দায়িত্বে চাপে উইকেটকিপার জশ বাটলারের কাঁধে।
এবার পিচের কথা। মেলবোর্নের প্রতিস্থাপিত পিচে সামান্য অসমান বাউন্স থাকতে পারে। কিছুটা ধীরগতির হলেও পিচে বাউন্স থাকবে যথারীতি। পেসারদের কোনো অভিযোগ থাকবে না। শঙ্কা রয়েছে বৃষ্টির। পরিসংখ্যান বলছে, মেলবোর্নে নিজেদের শেষ ১১ ম্যাচের নয়টিতেই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। আর ইংল্যান্ড মেলবোর্নে তাদের শেষ ১১ ম্যাচের আটটিতেই হেরেছে। তাই ফেভারিটের তকমাটা অজিদের গায়েই সেঁটে আছে। তবে বিশ্বকাপ তো, আগাম কিছু বলা বারণ!
সূত্রঃ সকালের খবর