এ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নিউজিল্যান্ডের। সেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ হ্যামিল্টনে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সও হলো বলার মতোই। জিততে পারলে হয়তো প্রাপ্তির ষোলোকলা পূর্ণ হতো। তবে ৩ উইকটে হারের পরও বাংলাদেশের প্রাপ্তি নেহাত মন্দ নয়। নিউজিল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দেওয়ার অভিজ্ঞতাটাও বলতে হবে দারুণই।
২৮৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই কিউইদের ছন্দপতন। সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে ৩৩ রানেই ২ উইকেটের পতন। তৃতীয় উইকেটে কিউইদের কক্ষপথে ফেরায় মার্টিন গাপটিল ও রস টেলরের জুটি। এ জুটিতে আসে সর্বোচ্চ ১৩১ রান। জুটি ভাঙেন সাকিব। বাংলাদেশের বাঁহাতি অলরাউন্ডারের ভেলকিতে ফেরার আগে গাপটিলের সংগ্রহ ১০৫ রান। চতুর্থ উইকেটে গ্রান্ট এলিয়টকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন টেলর। এ জুটিতে আসে ৪৬ রান। রুবেলের বলে ফেরার আগে এলিয়টের সংগ্রহ ৩৯ রান। এরপর ৫৬ রান করা টেলরকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফেরান নাসির হোসেন। এ সময় দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে ২১০ রান থেকে ৬ উইকেটে ২৪৭—৩৭ রানে কিউইদের ৩ উইকেট নেই! শেষ দিকে বাংলাদেশের কাছ থেকে জয়টা কেড়ে নেয় মূলত কোরি অ্যান্ডারসনের ২৬ বলে ৩৯, ড্যানিয়েল ভেট্টোরির ১০ বলে ১৬ ও টিম সাউদির ৬ বলে ১২ রানের ছোট ছোট তিনটি ঝোড়ো ইনিংস। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট সাকিবের দখলে। ২ উইকেট নিয়েছেন নাসির আর রুবেলের সংগ্রহে ১টি।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে মাহমুদউল্লাহর অপরাজিত ১২৮ ও সৌম্য সরকারের ৫১ রান ও শেষ দিকে সাব্বির রহমানের ২৩ বলে ৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৮৮ রান করে বাংলাদেশ। এ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড যা করতে পারেনি, বাংলাদেশ সেটা করেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো দল খেলেছে পুরো ৫০ ওভার। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের করা ৭ উইকেটে ২৮৮ রানও কিউইদের বিপক্ষে করা এ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান। নিজেদের ধারটা ভালোই দেখিয়েছে বাংলাদেশ!
এ ম্যাচ হারলেও বাংলাদেশের আক্ষরিক অর্থে কোনো ক্ষতি নেই। তবে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর রসদ জোগানোর দারুণ সুযোগ ছিল। সেটা পুরোপুরি না হলেও একেবারে ব্যর্থও বলা যাবে না বাংলাদেশকে।
১৯ মার্চ মেলবোর্নের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগে বাংলাদেশের সামনে থাকবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা।