এই বিশ্বকাপটা ছিল নিজের নিকট দুঃসহ অতীতটাকে মুছে ফেলার। সেটা কী দুর্দান্তভাবেই না করলেন রুবেল হোসেন। ৪৮তম ওভারে তামিমের ক্যাচ ফেলে দেওয়া, সেটিও স্নায়ুচাপ সামলে দুর্দান্ত খেলতে থাকা ক্রিস ওকসের, ব্রডের ছক্কা, সেই ওভারে আসা ১৫ রান… ম্যাচটা যখন মুঠো থেকেই বেরিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময় ৪৯তম ওভারটা করতে এলেন। খলনায়ক হয়ে যাওয়াও ঝুঁকি ছিল। মুরালিধরনের সেই চড়াও হওয়ার ছবিটাও হয়তো কারো কারো মনে উঁকি দিয়েছিল। কিন্তু রুবেল, তিনি তো তাঁর সর্বস্ব বাজি ধরেছেন এই বিশ্বকাপে।
৪৯তম ওভারের প্রথম তিন বলে উপড়ে ফেললেন ইংল্যান্ডের শেষ দুই উইকেট। এই বিশ্বকাপের শুরুতে যা অনেকেই ভাবতে পারেনি, সেটাই ঘটিয়ে দিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে শেষ আটে বাংলাদেশ! অথচ দল বিবেচনায় ‘এ’ গ্রুপটাই ছিল ‘গ্রুপ অব ডেথ’।
শুধু ৪৯তম ওভারটি নয়, রুবেল জোড়া আঘাত হেনেছিলেন ২৭তম ওভারেও। ৬৩ রান করে কাঁটা হয়ে থাকা ইয়ান বেলকে প্রথম বলে ফেরানোর পর চতুর্থ বলে অধিনায়ক এউইন মরগানকে খালি হাতে ফিরিয়ে। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাননি। সেটি বাংলাদেশকে ২৭৫ রানের পুঁজি এনে দেওয়া মাহমুদউল্লাহ পেয়েছেন। কিন্তু আগের দুই ম্যাচে ৩০০ পেরোনো ইংল্যান্ড যেভাবে ম্যাচ বের করে করে নিয়ে যাচ্ছিল, তাতে রুবেলের ৪৯তম ওভারটিকে মনে হচ্ছে আশ্চর্য জাদুকরী!
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজকের ইতিহাস গড়ার ম্যাচে ব্যাট হাতে নায়ক মাহমুদউল্লাহ হতে পারেন, হতে পারেন মুশফিক; কিন্তু বল হাতে ‘বীর’ কিন্তু রুবেলই। ৫৩ রানে ৪ উইকেট কেবল একটি পরিসংখ্যানই নয়, ম্যাচের গতি-প্রকৃতি বদলে দেওয়ার আখ্যানও বটে। সেই অ্যাখ্যানের নায়ক রুবেলের সাম্প্রতিক ইতিহাসটা আপাতত হিমাগারেই থাক। রুবেলের বীরত্বগাথাই হোক আজকের আলোচ্য।
মাশরাফিও ম্যাচ শেষে রুবেলের কথা বলেছেন। তবে পুরস্কার বিতরণীতে রুবেল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে স্বভাবসুলভ দুষ্টুমি করতে ছাড়েননি অধিনায়ক্। বিশেষ একটা শব্দে জোর দিয়ে বলেছেন, ‘আমি মনে করি রুবেল নিজেও আজ অনেক হ্যাপি!’
সূত্রঃ প্রথমআলো