শ্রীলঙ্কা দলে কখনোই নিয়মিত ছিলেন না রঙ্গনা হেরাথ। মুত্তিয়া মুরলিধরনের ছায়ার নিচে কাটিয়েছেন ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা। মুরলিধরন লঙ্কান ক্রিকেটে অতীত হয়ে যাওয়ার পরেও যে হেরাথের কপাল ফিরেছে, এ কথা খুব জোর দিয়ে বলা চলে না। দলে ‘স্বয়ংক্রিয় পছন্দ’ হতে পারেননি তিনি এখনো। এই তো কিছু দিন আগেই পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টে দল থেকে বাদ পড়লেন তিনি। দলে আসা-যাওয়া করতে থাকা সেই হেরাথই কিনা কাল গলে বলের ঘূর্ণি দিয়ে ‘খুন’ করলেন গোটা ভারতীয় দলকে। পরাজয়ের শঙ্কায় থাকা একটি দলকে এনে দিলেন আনন্দে ভেসে যাওয়ার মতোই এক বিজয়।
ভারতের বিপক্ষে ৪৮ রানে ৭ উইকেট তুলে নেওয়ার পরপরই উঠে এলো সেই পুরোনো প্রসঙ্গ। এবার কী হেরাথ পারবেন শ্রীলঙ্কা দলে একটা স্থায়ী জায়গা দখল করতে। এমন প্রশ্নের উত্তরে হেরাথ বেশ নির্লিপ্তই। বলেছেন, দলে থাকা, না থাকা নিয়ে তিনি একেবারেই ভাবেন না। দল থেকে বাদ পড়ার ব্যাপারটি তাঁর কাছে ডাল-ভাতই। তার মানে এমন দারুণ পারফরম্যান্সের পরেও যদি পরের টেস্টেই দল থেকে বাদ পড়ে যান, তাকেও বেশ স্বাভাবিকভাবেই নেবেন তিনি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টে দল থেকে বাদ পড়ার প্রসঙ্গ উঠতেই হেরাথ যেন একটু অভিমানীই, ‘দেখুন পাকিস্তানের বিপক্ষেই প্রথম দল থেকে বাদ পড়িনি। আমি অগণিতবার দল থেকে বাদ পড়েছি। আবার ফিরেও এসেছি। ব্যাপারটা আমার কাছে ডাল-ভাতই হয়ে গেছে।’
অভিযোগ করলেন ভালো করার পরেও তাঁর দল থেকে বাদ পড়ার বিষয়টি নিয়েও, ‘প্রতিটি ব্যাটসম্যান কিংবা বোলারের ক্যারিয়ারে বাজে সময় আসে। নির্বাচকদের কাছ থেকে সে তখন সহযোগিতাও পায়। তাঁকে সময় দেওয়া হয়। তাঁর অতীতের ভালো পারফরম্যান্সগুলোর বিশ্লেষণ করা হয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে দেখা গেছে দলের জন্য ভালো কিছু করেও আমি দল থেকে বাদ পড়ে গিয়েছি।’
মুরালিধরনের ছায়ায় নিজের অভিষেক নিয়ে তাঁর কোনো আক্ষেপ নেই। হেরাথের মতে, মুরালি লঙ্কান ক্রিকেটের কিংবদন্তি। আমার অভিষেক ২০০৯ সালে। মুরলি অবসরে গেছেন ২০১০ সালে। আমি মুরলির সঙ্গে নিজেকে তুলনায় আনার চেষ্টাই করিনি। কারণ আমি জানি, সেটা সম্ভব নয়। আমি কেবল আমার কাজটাই করে গিয়েছি। মুরলির ছায়ায় থেকে আমি তখন কেবল নিজের কাজটাই করে গিয়েছি। আমি নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করেছি, আমার সবটুকু নিয়েই।’
চতুর্থ ইনিংসের আগে একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন বলে জানিয়েছেন হেরাথ, ‘প্রথম ইনিংসে আমরা স্পিনাররা বেশ ভালো করেছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের আগে স্পিন কোচের সঙ্গে বসে নতুন একটা পরিকল্পনা করলাম। সেই পরিকল্পনাই মাঠে কাজে লাগিয়েছি। এ ধরনের পিচে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বল ফেলে যেতে হয়, সেটা করেই শেষ পর্যন্ত সফলকাম আমরা।’ সূত্র: এনডিটিভি।