মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানার পর গোটা ভারতেই জরু জবাই নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হিন্দু মৌলবাদী নেতা রাজনাথ সিং।
তবে পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় এ মুহূর্তে এ সংক্রান্ত বিল পাস করা তার সরকারের জন্য সহজ হবে না বলেও তিনি স্বীকার করেছেন।
রোববার ইন্দোর শহরে জৈন ধর্মগুরুদের এক সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
এ ব্যাপারে তার সরকারের ‘সদিচ্ছার’ কথা ব্যক্ত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ বলেন, ‘এ দেশে গরু জবাইকে কোনোভাবেই অনুমোদন করা হবে না। এটি বন্ধ করার জন্য আমরা আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
চলতি মাসের গোড়ার দিকে মহারাষ্ট্র রাজ্যে বিজেপি নেতৃত্বধীন সরকার গরু জবাই নিষিদ্ধ করে একটি আইন পাস করে। পরে হরিয়ানা রাজ্যেও এ সংক্রান্ত আইন পাস হয়। এখন গরু জবাই নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে মধ্যপ্রদেশেও।
ভারতের গোড়া হিন্দু সংগঠনগুলো নিজেদের পক্ষে জন সমর্থন গড়ে তুলতে বরাবরই গরু জবাই নিষিদ্ধ করার মত প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে।
রাজনাথ মহারাষ্ট্রের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘গরু জবাই বন্ধে আমাদের সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ করার কোনো সুযোগ নেই। এর আগে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকার এ সংক্রান্ত একটি কঠিন আইন প্রবর্তন করেছে। এখন মহারাষ্ট্র সরকারও গরু জবাই নিষিদ্ধ করতে সক্রিয় হয়েছে। আমরা কালবিলম্ব না করে মহারাষ্ট্র সরকারের পাস করা বিলটি প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের জন্য পাঠাতে যাচ্ছি।’
মহারাষ্ট্রে শুধু গরু নয়, মহিষ জবাইও নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
সমাবেশে জৈন ধর্মগুরু আচার্য শিভমুনি আসন্ন বাজেট অধিবেশনেই গোটা ভারতে গরু-মহিষ জবাই নিষিদ্ধ করে বিল আনার জন্য বিজেপি সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
তবে গোটা ভারতে গরু জবাই বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি পূরণ করা রাজনাথের পক্ষে আপাতত সম্ভব হবে না বলেই মনে হয়। কেননা এ সংক্রান্ত বিল পাস করতে গেলে পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও রাজ্যসভায় বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়।
এই বাস্তবতা স্বীকার করে তিনি বলেন,‘আপনার বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অবশ্যই পড়ে থাকবেন পার্লামেন্টে একটা বিল পাস করতে আমাদের কতটা কাঠখড় পোড়াতে হয়।’
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে ভারতের কৃষিমন্ত্রী থাকার সময়ও তিনি একবার গরু জবাই নিষিদ্ধ করার জন্য পার্লামেন্টে বিল এনেছিলেন। কিন্তু সেবারও তার সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি।