মুসলিম বিশ্বের চালকের আসনে তুরস্ক

ফ্রান্সকে বরাবর যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে দেখা হয়। মধ্যপ্রাচ্য নীতিতেও প্যারিস মার্কিন সিদ্ধান্তকেই অনুসরণ করে। কিন্তু, জেরুজালেম ইস্যুতে হঠাৎ করে সেই নীতিতে পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে, অন্তত দেশটির গণমাধ্যমগুলোর সংবাদ তাই বলছে। বুধবার ইস্তাম্বুলে ওআইসির জরুরি সম্মেলন থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে জেরুজালেমকে পাল্টা ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি ওআইসি জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃত দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে বরাবরই জেরুজালেমকে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত প্রতিফলিত হচ্ছিল। পত্রিকাগুলো আবার সিরিয়া ও অন্য স্থানগুলোয় শান্তির কথাও বলে আসছিল।

কিন্তু, ওআইসির সম্মেলন থেকে স্বীকৃতির পর ফ্রান্সের ‘লাকরোয়া’ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছে, জেরুজালেমকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করার প্রতিবাদে আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতারা এবার জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়েছে। একইসঙ্গে সংগঠনটি ট্রাম্পের উল্লিখিত সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করেছে।

ফরাসি পত্রিকা ‘লামন্ড’ সম্মেলনের কৃতিত্ব দিয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসপে তাইয়েপ এরদোয়ানকে। পত্রিকাটির ভাষায়, এরদোয়ান এই সম্মেলনের মাধ্যমে ‘নিপীড়িত মুসলমানের পক্ষে প্রতিরোধকারী’ হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন। এমনকি শীর্ষ সম্মেলনটির পটভূমিতে মুসলিম বিশ্ব মনে করছে, তুরস্ক সৌদি আরবের শূন্যস্থান পূরণ করছে।

আর ‘লিবরাসিউন’ পত্রিকার মতে, আঙ্কারা এ ইস্যুতে সৌদি আরবের চেয়ে বেশি অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। অথচ ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওআইসি সৌদির তত্ত্বাবধানেই চলে আসছিল।

পত্রিকাটি এ মতও দিয়েছে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে রিয়াদ নিজেকে খুব বিব্রত মনে করছে। কারণ, নতুন স্ট্র্যাটেজিতে ইরানের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রিয়াদ ইসরাইলের কাছে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ফ্রান্সের আরও কিছু পত্রিকার মতে, ইসরাইলিরা তাদের রাজনৈতিক মতপার্থক্য থেকে চোখ ফিরিয়ে জেরুজালেমকেই ইসরাইলের একক ও স্থায়ী রাজধানী হিসেবে পেতে একমত।

তবে লামন্ড পত্রিকা বলছে, ইসরাইলিদের অনেকে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তারা মনে করেন, জেরুজালেম উভয় দেশেরই রাজধানী হওয়া উচিত। কিন্তু, দেশদ্রোহী অপবাদের আশঙ্কায় তারা নিজেদের মতামত তুলে ধরতে পারছেন না।

পত্রিকাটি ইসরাইলের এসব ব্যক্তি সম্পর্কে বলেছে, ‘এরাই শান্তির নিয়ামক’।

Exit mobile version