সংকটাপন্ন লেবাননে ইরানি তেল আনলো হিজবুল্লাহ

57
কটে জর্জরিত লেবাননে ইরানি তেল আনলো হিজবুল্লাহ
কটে জর্জরিত লেবাননে ইরানি তেল আনলো হিজবুল্লাহ

অর্থনৈতিক দুর্দশাগ্রস্ত লেবাননের জ্বালানি সংকট প্রশমনে ইরান থেকে জ্বালানি তেল নিয়ে এসেছে দেশটির সশস্ত্র রাজনৈতিক দল হিজবুল্লাহ। বৃহস্পতিবার সিরিয়ার সীমান্তবর্তী আল-আইন গ্রাম দিয়ে প্রায় ৮০টি তেলবাহী ট্রাক হিজবুল্লাহর তত্ত্বাবধানে লেবাননে প্রবেশ করে।

এর আগে গত মাসে হিজবুল্লাহর প্রধান শেখ হাসান নাসরুল্লাহ দেশটির জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় ইরান থেকে তেল আমদানির ঘোষণা দেন।

আল-আইন গ্রামে বেশ কিছু লোক হিজবুল্লাহর হলুদ পতাকা এবং ইরান ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনকারী ব্যানার নিয়ে তেলবাহী ট্রাকগুলোকে স্বাগত জানায়।

প্রায় ৪০ লাখ লিটার পেট্রোল ভর্তি এই ট্রাকগুলো হিজবুল্লাহর নিয়ন্ত্রিত জ্বালানি সরবরাহকারী কোম্পানি আল-আমনার পেট্রোল পাম্পগুলোতে সরবরাহ করা হবে।

স্বাগত জানানোর জন্য জড়ো হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে জাওয়াদ নামের হিজবুল্লাহর এক সমর্থক বলেন, ‘এটি এক মানবিক সাহায্য যা জনগণের চাহিদা মেটাবে।’

তিনি বলেন, হিজবুল্লাহ রাষ্ট্রের প্রতিস্থাপন করছে না। রাষ্ট্র দায়িত্ব সম্পূর্ণ পালনের উপযোগী না হওয়া পর্যন্ত এটি একটি সাময়িক ব্যবস্থা।

এর আগে রোববার ইরানের তেলবাহী ট্যাঙ্কার সিরিয়ার বানিয়াস বন্দরে এসে পৌঁছায়। সিরিয়ায় জ্বালানি তেল পৌঁছানোর পর হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ বৃহস্পতিবার লেবাননে নিয়ে আসার ঘোষণা দেন।

তিনি জানান, আমদানি করা এই তেল হাসপাতাল, এতিমখানাসহ প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে এবং ‘যথাযথ মূল্যে’ অন্যদের কাছে সরবরাহ করা হবে।

হাসান নাসরুল্লাহ ইরান থেকে আরো তেল আমদানির ঘোষণা করেন।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপিত ইরানের তেল আমদানির কারণে লেবাননের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে কি না, এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ওয়াশিংটন জানিয়েছে, ইরানের তেল বিক্রির ওপর এখনো নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।

এদিকে লেবাননের সরকার বলছে, হিজবুল্লাহ ইরান থেকে তেল আনতে তাদের অনুমতি নেয়নি।

গত ৮ সেপ্টেম্বর জর্দানের রাজধানী আম্মানে চার দেশের জ্বালানিমন্ত্রীদের বৈঠকে মিসরীয় প্রাকৃতিক গ্যাস জর্দান ও সিরিয়া দিয়ে পাইপলাইন দিয়ে লেবাননে নিয়ে যাওয়ার সমঝোতা হয়।

২০১৯ সালের অক্টোবরে বেকারত্ব মোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দুর্নীতির অবসানের দাবিতে দেশজুড়ে অব্যাহত বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়েন সাদ আল-হারিরি। ওই বছরের শেষ থেকেই লেবাননের অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে।

গত বছরের আগস্টে বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর দেশটির অর্থনীতি আরেক দফা ধাক্কা খায়। বিস্ফোরণের কারণে লেবাননের প্রধান এই বন্দর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় দেশটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রায়ই বন্ধ হয়ে যায়।

ক্রমেই অর্থনৈতিক দুর্গতির দিকে যাওয়া লেবাননের অবস্থার সংস্কারের জন্য সাদ আল-হারিরিকে গত বছরের অক্টোবরে সরকার গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু সরকার গঠনের ব্যর্থতায় এই বছরের জুলাইয়ে তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালে নতুন দায়িত্ব পান সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাস পর ১‌০ সেপ্টেম্বর নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা দেন তিনি।

সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড