হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির পর আসলে কী ঘটছে?

অবরুদ্ধ গাজায় ১০ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত টানা ১১ দিন প্রাণঘাতী লড়াই চলেছে। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে মারাত্মক লড়াই চলার পর আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয়েছে। মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য হয় ইসরাইল। যুদ্ধ থেমেছে৷ আর ইসরাইল থেকে উড়ে আসছে না রকেট৷ নতুন করে প্রাণ বা সম্পদ হানির আশঙ্কা এই মুহূর্তে নেই৷ তবে যুদ্ধের এমন সব চিহ্ন আছে যেসব মুছে গাজাবাসীর জন্য স্বাভাবিক জীবনে ফেরা খুব কঠিন৷ অনেক পরিবার আশ্রয়হীন । অনেকের মাথায় হাত! অনেকের বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস! মাথা গুজার ঠাঁই নেই! ধ্বংসস্তূপে পরিণত বাড়ি-ঘর।

গাজায় বর্তমান পরিস্থিতি

মারাত্মক সহিংস এই লড়াইয়ের তীব্রতার কারণে গাজায় নানা ধরনের সমস্যায় জর্জরিত বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরমে ওঠেছে। দু’পক্ষের মারাত্মক সংঘাতে সাধারণ মানুষের জীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্তত এক হাজার বাড়ি একেবারে ধ্বংস হয়েছে, আরো সাত শতাধিক বাড়ির বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়েছে এবং ১৪ হাজার ঘরবাড়ি কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সংঘাতের পর থেকে গাজায় বিদ্যুৎ সঙ্কট বেড়েছে। বিদ্যুতের বিধ্বস্ত লাইনগুলো পুরোপুরি ঠিক হয়নি। দেখা দিয়েছে তীব্র জ্বালানি সঙ্কট। সীমান্ত পারাপারের সমস্যা বা গাজা থেকে ঢোকা ও বের হওয়ার সঙ্কট আরো বেড়েছে।ত্রাণবাহী কিছু গাড়ির বহরকে যাতায়াতের অনুমতি দেয়া ছাড়া সীমান্ত বন্ধই রাখা হচ্ছে। মানুষের ব্যবসা বাণিজ্য করার সুযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

গাজা ভূখন্ডে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে আসার টানেল বা সুড়ঙ্গ পথের নেটওয়ার্কে হামলা চালিয়ে সুড়ঙ্গপথগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। ফলে খাদ্য সরবরাহের চোরা পথও বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। স্থানীয় অর্থনীতিতে নেমে এসেছে বড় ধরনের বিপর্যয়। ঘুরে দাঁড়ানোর পথে বড় ধরনের একটা ধাক্কা দিয়েছে।স্থানীয় মানুষদের থাকার এবং কৃষিকাজের জন্য জমি অনেকটাই কমে গেছে।

কয়েকশ বসতবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। অনেক বাড়ি মাটিতে মিশে গেছে। গাজার জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা নানা কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাড়ছে খাবার ও জীবিকার সঙ্কট, গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি, খাদ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। কৃষিকাজ ও মাছ ধরার ওপর ইসরাইল বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে।বেশিরভাগ মানুষ পানি সঙ্কটে দিন কাটাচ্ছে।

গাজায় ইসরাইলের পরাজয়

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আইজ্যাক ব্রিক বলেন, ইসরাইল হামাসের রকেট ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। এবারের যুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে তেল আবিব কয়েকটি ফ্রন্টে এক সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলে মহা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। গাজায় ইসরাইল যুদ্ধবিমান দিয়ে বোমা হামলা করেছে। বিমান হামলা করে যুদ্ধে বিজয়ী হওয়া যাবে এমন ধারণা পুরোপুরি ভুল।আমরা গাজা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছি। এ অবস্থায় আমরা কীভাবে কয়েকটি ফ্রন্টে এক সঙ্গে যুদ্ধ করতে সক্ষম হবো। আমরা কীভাবে মোকাবিলা করবো, যখন হিজবুল্লাহও যুদ্ধে নামবে।

আল-আকসায় নামাজরতদের তাড়ানো

ফিলিস্তিনিদের ওপর বোমাবর্ষণ বন্ধ হলেও থামেনি ইসরাইলের দখলদারিত্ব। যুদ্ধবিরতি কতক্ষণ টিকবে তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কারণ নানাভাবে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ আল-আকসায় ফজরের নামাজরত মুসল্লিদের ওপর আচমকা হামলা চালায়েছে। মুসল্লিদেরদের প্রচণ্ড মারধর করে, পিটিয়ে বের করে সেখানে একদল ইহুদিকে ঢুকিয়েছে ইসরাইলি পুলিশ।

ঘটনাস্থল থেকে ফিলিস্তিনিদেরকে গ্রেফতারও করেছে ইসরাইলি পুলিশ। এছাড়া আল-আকসার প্রবেশপথে কড়াকড়িও বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে ৪৫ বছরের কম বয়সী মুসল্লিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে দখলদাররা। যুদ্ধবিরতির পর আল-আকসায় ফিলিস্তিনিরা বিজয়োল্লাস করার সময়ও তাদের ওপর হামলা চালায় ইসরাইলি পুলিশ। সম্প্রতি উগ্রবাদী ইহুদি দখলদাররা বেশি সংখ্যায় আল-আকসায় যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। পবিত্র মসজিদটির জায়গায় তৃতীয় ইহুদি উপাসনালয় বানানোর লক্ষ্য তাদের।

ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের দিকে ঝুঁকছে ইরান

বিদেশি শক্তি মোকাবিলা এবং নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে ইরান এখন ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের দিকে ঝুঁকছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র শক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে এখন তেহরান সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে দেশের ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা বিরাট সফল্য অর্জন করেছে। এ ছাড়া ট্যাংক ও সাঁজোয়াযান বিধ্বংসী রকেট তৈরিতেও ইরান বড় রকমের সফলতা পেয়েছে। এতে দেশের স্থলযুদ্ধের শক্তি বেড়েছে অনেকগুণ।

হামাস নেতাকে হত্যার হুমকি ইসরাইলের

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার হুমকি দিয়েছে ইসরাইল। ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী ও উগ্রপন্থি লিকুদ পার্টির সিনিয়র সদস্য ইসরাইল কাৎজ ওই হুমকি দিয়েছেন। কট্টর ইহুদিবাদী এ ইসরাইলি মন্ত্রী বলেন, যদি দুপক্ষের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তির সামান্যতম লঙ্ঘন হয় তা হলে ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করবে ইসরাইল। হামাসের সঙ্গে যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছে, তাতে ইয়াহিয়াকে ইসরাইলি হত্যা থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়নি।

ফিলিস্তিনিদের কাছে ক্ষমা চান জাতিসংঘ কর্মকর্তা

সম্প্রতি ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইলের পক্ষে কথা বলার ঘটনায় গাজাবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিন শরণার্থীবিষয়ক ত্রাণ সংস্থা-আউএনআরডব্লিউএর পরিচালক ম্যাথিয়াস স্কামলে। গাজাবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি তিনি এই অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক পাশবিক হামলায় নিহতদের প্রতি শোক ও সমবেদনাও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গাজার বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করার কোনো ব্যাখ্যা থাকতে পারে না। গত দুই সপ্তাহ গাজা উপত্যকা ও সেখানকার অধিবাসীদের জন্য ছিল অত্যন্ত ভয়ঙ্কর।

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর

যুদ্ধবিরতির মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। চারদিনের এই রাষ্ট্রীয় সফরে প্রথমে ইসরায়েলে পৌঁছান তিনি। এই সফরে ব্লিনকেন ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি যান পশ্চিম তীরের রামাল্লায়। সেখানে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠন করেন ব্লিনকেন।

এরপরেই অ্যান্টনি ব্লিনকেন যাবেন পাশের দেশ মিসর ও জর্ডানে। সেখানে ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যকার সংঘাত নিরসন নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি। ব্লিনকেনের এই সফর আপাতত কিছুদিনের জন্য ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করতে পারে। তবে এ সমস্যার মূল রয়েছে আরও গভীরে। সেখান থেকে সমাধান করতে হবে।

ফিলিস্তিনে পুনরায় মার্কিন দূতাবাস চালুর ঘোষণা

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, ফিলিস্তিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস পুনরায় চালু করা হবে। ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সহায়তা করার জন্য এটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে এবং এ বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করতে আমি ফিলিস্তিন এসেছি। পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর নির্মিত একটি সম্পর্ক এবং ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিরা একইভাবে সুরক্ষা, স্বাধীনতা, সুযোগ ও সমান মর্যাদা প্রাপ্য।

আল-আকসার ওপর আগ্রাসনের জবাব দেবে হিজবুল্লাহ

সাম্প্রতিক গাজা যুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিজয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর সামরিক শাখাগুলো চমৎকারভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে।সম্প্রতি গাজা যুদ্ধে যা ঘটেছে তা ছিল ইসরাইলি শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ইতিহাসে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী। এ যুদ্ধে যা ঘটেছে তা থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলকে এই শিক্ষা নিতে হবে যে, বায়তুল মুকাদ্দাস ও মসজিদুল আকসার বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো। প্রতিরোধ যোদ্ধারা এবার গাজাবাসীকে রক্ষা করতে নয়; বরং আল-কুদসকে রক্ষা করতে যুদ্ধে জড়িয়েছেন।

ইসরাইলি গোয়েন্দা মোসাদ প্রধানকে বরখাস্ত

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ইয়োসি কোহেনকে বরখাস্ত করেছেন। ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সামরিক শক্তি সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থতার জন্য কোহেনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।নেতানিয়াহু সোমবার রাতে মোসাদের কিছু কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করার অনুষ্ঠানে বলেন, ইয়োসি কোহেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং মোসাদের উপ-প্রধান ডেভিড বার্নিয়াকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।

ইসরাইলকে বয়কটের ডাক অসলো বিশপের

ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের পর নরওয়ের রাজধানী অসলোর বিশপ ক্যারি ভিতেবার্গ তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন , আমি বিশ্বাস করি সাধারণ বয়কট আন্দোলন হতে পারে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সেরা অহিংস প্রতিরোধ আন্দোলন। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আর্থিক সহায়তা করার নৈতিক ও আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমরা নরওয়ের গির্জাগুলোর প্রতি ‘ইসরাইল বয়কট’ আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাই। আমরা মনে করি- সমস্যার সমাধান ও শান্তি আনার জন্য ইসরাইল থেকে পুঁজি প্রত্যাহার এবং তেলআবিবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ভালো উপায় হতে পারে।

ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরাইলি পুলিশ

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকিনের সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে এক ফিলিস্তিনিকে নিজ বাড়িতে হত্যা করেছে ইসরাইলি গুপ্তচর বাহিনী। তাকে খুব কাছ থেকে বেশ কয়েকবার গুলি করা হয়েছে। ২৫ মে উম্ম আল-সারাইয়াত এলাকায় আল-আমারি শরণার্থী শিবিরে আহমাদ জামিল ফাহাদকে হত্যা করে দখলদার দেশটির পুলিশের মুসতারিবিন ইউনিট। মুসতারিবিন শব্দটির অর্থ হচ্ছে, যারা আরবদের মধ্যে লুকিয়ে থাকেন। এই বাহিনীর সদস্যরা আরব কিংবা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে মিশে গিয়ে অভিযান, গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ড চালায়।

যুদ্ধবিরতিতে ভরসা নেই হামাসের

ইসরাইল যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও, অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। গাজার বিভিন্ন স্থানে টহল দিয়েছে হামাসের স্বশস্ত্র যোদ্ধারা। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরাইল ফের হামলা চালাতে পারে, এমন শঙ্কা থেকেই সতর্ক থাকার কথা জানিয়েছেন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। ইসরাইলের যুদ্ধবিরতিকে নিজেদের বিজয় আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে উল্লাস করেন হামাস সদস্যরা। সেইসঙ্গে গেলো কয়েকদিনের ইসরাইলি বর্বরতায় হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন কাসসাম ব্রিগেডের শত শত যোদ্ধা অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গাজা শহরের রাজপথে প্রকাশ্যে সামরিক মহড়া চালিয়েছে।হামাসের অন্যতম নেতা ইসমাইল রেদওয়ান বলেন, ‘ইসরাইলকে মোকাবিলা করার জন্য ইজ্জাদ্দিন কাসসাম ব্রিগেডস তার সামরিক সক্ষমতা শক্তিশালী করার কাজ চালিয়ে যাবে। সাম্প্রতিক যুদ্ধ প্রমাণ করেছে, বায়তুল মুকাদ্দাস হবে ফিলিস্তিনের চিরকালীন রাজধানী।’

ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্লক

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সেখানকার বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক দেখেন তাদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার চিফ করেসপন্ডেন্ট ওয়াইল আল-দাহদৌ ও সংবাদদাতা হিশাম জাকুতও রয়েছেন। গাজার অন্তত ১৭জন সাংবাদিক তাদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন। এই ঘটনাগুলো হোয়াটসঅ্যাপের মালিক ফেসবুকের ফিলিস্তিন-বিরোধী নতুন পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সম্প্রতি ফিলিস্তিনপন্থী স্ট্যাটাস, মেসেজ ও হ্যাশট্যাগ মুছে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।

 

Scroll to Top