ছাত্রদের ভালোবাসার কাছে হেরে গেলেন শিক্ষক

লিটন বিশ্বাস। একটি কারিগরি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ব্যক্তিগত কারণে বাড়ির কাছে আরেক স্কুলে বদলি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ খবর পেয়ে তার পা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকরাও ঘিরে ধরেন তাকে।

অবশেষে শিক্ষার্থীদের ভালোবাসার কাছে হেরে যান লিটন বিশ্বাস। তিনি ঘোষণা দিতে বাধ্য হন প্রিয় শিক্ষার্থীদের ছেড়ে যাবেন না।

শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের ‘পাল্লা কালীপদ চক্রবর্তী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে’ এ ঘটনা ঘটে।

এ স্কুলে বর্তমানে ৬০ জন স্থায়ী শিক্ষক–শিক্ষিকা রয়েছেন। কারিগরি বিভাগে রয়েছেন ১৫ জন। শিক্ষার্থীরা সংখ্যা প্রায় ১৯০০ জন।

২০১০ সালে বিড়া বল্লভপুর হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষকের পদ ছেড়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে এ স্কুলে যোগ দেন লিটন বিশ্বাস।

স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি, ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক লিটন প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয়ার পর স্কুলের অনেক উন্নতি হয়েছে।

কিন্তু মধ্যম গ্রামের বাসিন্দা লিটন বিশ্বাস ব্যক্তিগত কারণে বাড়ির কাছের স্কুলে যাওয়ার জন্য শিক্ষা দফতরে আবেদন করেন। গত জানুয়ারি মাসে তার আবেদন মঞ্জুর হয়।

এর পর গত সপ্তাহে শিক্ষা দফতর থেকে ঘোলা থানার তেঘড়িয়া শশীভূষণ হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের জন্য চিঠি পান লিটন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী সপ্তাহে তিনি বর্তমান স্কুল ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এদিকে প্রধান শিক্ষক লিটনের বদলির কথা জানাজানি হলে শনিবার তিনি স্কুলে ঢুকতেই ঘটে চমকপ্রদ ঘটনা। দলে দলে ছাত্রছাত্রীরা তাদের প্রধান শিক্ষককে ঘিরে ধরে। তারা বলতে থাকে- ‘স্যর আপনি আমাদের ছেড়ে যাবেন না।’ একপর্যায়ে কয়েকজন তার পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।

ছাত্রদের পাশাপাশি স্কুলের অন্য শিক্ষক ও অভিভাবকরাও তাকে বদলি না হতে অনুরোধ জানাতে থাকেন।

সবার উপর্যুপরি আবেদনের মুখে নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন লিটন বিশ্বাস। তিনি ঘোষণা দেন, ‘প্রিয় ছাত্রছাত্রী ও অন্যদের ভালোবাসার কাছে হেরে গেলাম। বদলি হয়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বাধ্য হলাম।’

Exit mobile version