শক্তিশালী ভূমিকম্পে নেপাল এখন লাশের শহরে পরিণত হয়েছে। চারিদিকে ধ্বংসস্তূপ আর ধ্বংসস্তূপ। দুর্গত ও আহত মানুষের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে দেশটি।
সবশেষ খবরে, দেশটিতে নিহতের সংখ্যা ১,৯০০ ছাড়িয়েছে। এখনো ধ্বংস্স্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে শত শত মানুষ। পানি, খাবার ও চিকিৎসার অভাবে কাতরাচ্ছে নেপালিরা। বিদ্যুৎ ও পানির লাইন বিচ্ছিন্ন থাকায় নেপালে ভূতুরে অবস্থা তৈরি হয়েছে। দুর্গত ওই সব মানুষের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা।
এরই মধ্যে তিন টন ত্রাণ এবং ২০০ উদ্ধারকর্মীর একটি দলসহ রোববার সামরিক পরিবহণ বিমান নেপালে পাঠিয়েছে ভারত। ‘অপারেশন মৈত্রী’ নামের বিশাল অভিযান শুরু করছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আরো তিনটি বিমান সেখানে পাঠানো হবে। সেগুলোতে ভ্রাম্যমান হাসপাতাল ও জরুরি ত্রাণ সামগ্রী থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএইড জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীদের একটি দল নেপালের পথে রওয়ানা হয়েছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র উদ্ধারকারী দল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ও ১০ লাখ ডলারের মানবিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন নেপালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি নেপালিদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নেপালিদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তান সি-১৩০ বিমানে চিকিৎসক, হাসপাতাল সরজ্ঞাম, খাদ্য, টিন ও আধুনিক প্রযুক্তি যন্ত্রসহ উদ্ধারকারী দল আজই নেপালে পাঠাচ্ছে। শ্রীলঙ্কাও চিকিৎসার যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক ও ওষুধ পাঠাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের প্রাধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ভূমিকম্প দুর্গতদের সাহায্যে ‘সব কিছু করার’ ঘোষণা দিয়েছেন। সাহায্য ও সহায়তার যেকোন ধরণের অনুরোধে সাড়া দিতে ফ্রান্স প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ। বাংলাদেশ সরকারও নেপালকে সব ধরনের সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।
শনিবার দুপুরে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে নেপাল। বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকাও একই সঙ্গে কেঁপে উঠে।
ভূমিকম্পের পরপরই নেপালের তথ্যমন্ত্রী মিনেন্দ্র রিজাল আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে বলেন, ‘আমাদের এখন আন্তর্জাতিক সব সম্প্রদায় থেকে সাহায্য প্রয়োজন। আমরা এখন যে দুর্যোগের মুখে পড়েছি, তা মোকাবেলায় যাদের বেশি জ্ঞান ও সরঞ্জাম রয়েছে, তাদের সাহায্য এখন আমাদের জন্য জরুরি।’
তথ্যসূত্র : এনবিসি, শিকাগো ট্রিবিউন।