বোকো হারাম কী? বোকো হারামের ইতিহাস জেনে নিন

বোকো হারাম নামটি অনেকের কাছেই পরিচিত। এটি নাইজেরিয়ার সব থেকে বড় ইসলামি রক্ষণশীল একটি দল। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। মোহাম্মদ ইউসুফ নামে এক মুসলিমের হাত ধরে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি একটি ধর্মপালন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন উত্তর অঞ্চলীয় শহর মেইধঘুরিতে। সেখান থেকেই এর যাত্রা শুরু হয়।

বোকো হারাম অর্থ কী?

বোকো হারাম অর্থ- ‘পশ্চিমা সভ্যতা নিষিদ্ধ’। যদিও বোকো হারামের অফিসিয়াললি এর অর্থ করা হয়েছে- যারা রাসুল সা. -এর শিক্ষা ও জিহাদ প্রচারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তারাই বোকো হারাম। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করাই তাদের লক্ষ্য ছিল।
তাদের সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই তারা কি সন্ত্রাসী নাকি ইসলাম প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন?
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমরা জানবো বোকো হারাম নামে এ সংগঠনের উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে। তবে তার আগে আপনি যদি আমাদের চ্যানেলে নতুন হয়ে থাকেন, তাহলে চ্যানেলটি অবশ্যই সাবস্ক্রাইব করুন।

বোকো হারামের ইতিহাস

বোকো হারাম যাত্রার শুরুতে সম্পূর্ণ অহিংস ছিল। এমনকি মানুষও তাদের পছন্দ করা শুরু করেন। মনে করা হতো, ভবিষ্যতে তারাই উত্তর নাইজেরিয়া শাসন করবেন।
তৎকালীন নাইজেরিয়ার অবস্থা ছিল খুবই নাজুক। শিক্ষাব্যবস্থা খুবই নিম্নমানের। দারিদ্র্য সমস্যা প্রকট, বেকারত্বের সংখ্যা অনেক বেশি। বোকো হারাম নেতারা প্রাথমিকভাবে মানুষদের সাহায্য করা শুরু করেন। হাসপাতালে তাদের খরচে চিকিৎসা চালু করেন। মানুষকে বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে সহায়তা করেন।
এভাবেই তাদের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়তে শুরু করে। বিভিন্ন এলাকায় বোকো হারামের আধিপত্য তৈরি হতে থাকে। একরকম শাসনভার চলে আসে তাদের হাতে।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০০৯ সালে উত্তর অঞ্চল থেকে সরকারি বাহিনীকে তাড়িয়ে দেয়। সরকার বাহিনী বোকোহারমের ওপর সশস্ত্র অভিযান চালায়।
এতে বোকো হারামের ৮০০-এর বেশি সদস্য মারা যান। প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইউসুফকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের হেফাজতে তাকে মেরে ফেলা হয়। এরপর মনে করা হয় বোকো হারাম এখানেই শেষ।
তারপরেও বর্তমানে বোকোহারাম কিভাবে এত শক্তিশালী হলো?

বোকো হারামের পুনরুত্থান

তারপর তাদের উত্থান ঘটে তাদের নতুন নেতা আবুবকর সেকাওয়ের হাত ধরে। এরপর এটিকে একটি গোপন বিদ্রোহী গোষ্ঠী থেকে ভয়ঙ্কর জঙ্গি গোষ্ঠীতে পরিণত করেন তিনি। ২০১১ সালে নাইজেরিয়ার রাজধানীর আবুঝায় জাতিসংঘ সদর দফতরে হামলা করে আলোচনায় আসে বোকো হারাম। সেখান তারা ২৩ জনকে হত্যা করে ও ৭৫ জনকে আহত করে। এরপর ২০১৪ সালের মার্চ মাসে জোবি ও চিবকের দুটি ওয়েস্টার্ন বোডিং স্কুলে হামলা চালায় বোকো হারাম। যেখান থেকে তারা ২৭৬টি মেয়েকে কিডন্যাপ করেন। তখন বিশ্বব্যাপী খবরে আসে বোকো হারাম।
হোয়াইট হাউস থেকে বোকো হারামের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সহধর্মিণী মিশেল ওবামাসহ অনেকে। নাইজেরিয়ান সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধারে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েও মুক্ত করতে ব্যর্থ হয়।

বোকো হারামের গণহত্যা

নাইজেরিয়ার এক নাগরিক বলেন, তারা এত মানুষকে হত্যা করেছে, তা গণনা করা অসম্ভব ছিল। সত্যিই তারা গণহারে হত্যা করেছে মানুষদের। ২০১৫ সালে বামা ও গোজা শহর বোকো হারাম নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর আবাদামও কন্ট্রোলে নেয়। দামবোয়া এবং চিবক দখল করে নাইজেরিয়ার বর্ণ প্রদেশটিই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় বোকো হারাম।

আবু বকর সাকাও নিহত

গত ১ মাস আগে বোকো হারাম নেতা আবু বকর সাকাও নাইজেরিয়ান সেনা সদস্যদের হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে আবু মুসাব আল আল বারনবী বোকো হারামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

জানা যায় বোকো হারাম আল কায়দা থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকে। তাদের সাহায্য করে আরো অনেক সংস্থা।

Scroll to Top