ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে একটি মেয়েদের স্কুলে ৮৮ জন কিশোরী ছাত্রীকে অনেকের সামনে জামাকাপড় খুলিয়ে শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে সেখানকার পুলিশ জানিয়েছে।
তাদের অপরাধ ছিল, ওই মেয়েদের ক্লাসরুমে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্য এক ছাত্রীকে নিয়ে ‘নোংরা কথা’ লেখা একটি কাগজের চিরকুট পাওয়া গিয়েছিল।
পুলিশ এই ঘটনার যে অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেছে তাতে বলা হয়েছে, এর পরই স্কুলের দুজন সহকারী শিক্ষক ও একজন জুনিয়র শিক্ষক মিলে ক্লাশ সেভেন ও এইটের মোট ৮৮ জন ছাত্রীকে সবার সামনে জামাকাপড় খুলতে বাধ্য করেন।
এই ঘটনাটি ঘটে অরুণাচলের পাপুম পারে জেলায় গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর), কিন্তু প্রথম কদিন ছাত্রীরা এই শাস্তির বিষয়ে বাইরে মুখ খোলেনি।
কিন্তু পরে তাদের অনেকে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় ‘অল সাগালি স্টুডেন্টস ইউনিয়নে’র কাছে এই ঘটনার ব্যাপারে জানায়, ওই সংগঠনই পুলিশের কাছে অভিযোগ নিয়ে যায়।
পাপুম পারে জেলার পুলিশ প্রধান টাম্মে আমো আজ বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন যে অল সাগালি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, বিষয়টি রাজধানী ইটানগরের একটি মহিলা থানাতে ‘রেফার’ করে দেয়া হয়েছে।
এখন ওই মহিলা থানা থেকে কর্মকর্তারা এসে সংশ্লিষ্ট ছাত্রী, তাদের অভিভাবক ও অভিযুক্ত শিক্ষকদের সঙ্গে বসে বিষয়টির তদন্ত করবেন বলেও পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন।
এদিকে অল পাপুম পারে ডিস্ট্রিক্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়নও আর একটি বিবৃতি দিয়ে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে।
ওই ছাত্র সংগঠনটি তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ক্লাসরুম থেকে চিরকুট মেলার পর শিক্ষিকারা ছাত্রীদের কৈফিয়ত তলব করেছিলেন। কিন্তু ওই চরম শাস্তি দেয়ার আগে তারা একবারও তাদের অভিভাবকদের কিছু জানাননি।
অরুণাচল প্রদেশের রাজনৈতিক দলগুলিও এই ঘটনার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে।
রাজ্য কংগ্রেস কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, একজন শিশু বা নাবালিকার আত্মমর্যাদার লঙ্ঘন করা শুধু বেআইনিই নয়, অসাংবিধানিকও বটে।
এই ঘটনায় কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয় নামে ওই স্কুলটির কর্তৃপক্ষর কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি।