লেবাননের জনপ্রিয় ইসলামী গণ-প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ইয়েমেনে আগ্রাসন চালানোর জন্য সৌদি রাজতান্ত্রিক সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন: সৌদি সরকার ইয়েমেনে তার আগ্রাসনকে ‘দৃঢ়তার ঝড়’ বলে অভিহিত করেছে যা বিস্ময়কর! প্রশ্ন হলো- মজলুম ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের কয়েক দশক ধরে আগ্রাসন চলতে থাকা সত্ত্বেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো ঝড় তো দূরের কথা দৃঢ়তার কোনো মৃদু হাওয়াও কেন বইয়ে দেয়নি সৌদি রাজ-সরকার?
তিনি বলেছেন, বহু বছর ধরে সুন্নি মাজহাবের অনুসারী মজলুম ফিলিস্তিনি জাতি সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করছে, অথচ সৌদি রাজ-সরকার ফিলিস্তিনিদের জন্য কিছুই করেনি।
সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ইয়েমেনের বর্তমান পরিস্থিতিকে তিউনিশিয়া ও মিশরের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, একজন পদত্যাগী প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার জন্য এ ধরনের ব্যাপক হামলা কখনোই ভালো অজুহাত হতে পারে না।
হিজবুল্লাহর মহাসচিব সৌদি রাজ-সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, আপনারা কি কেবল একটি যুক্তিও দেখাতে পারবেন মুসলিম বিশ্বের আলেম, জনগণ ও আপনাদের মুফতিদের কাছে যে ইয়েমেনের বর্তমান পরিস্থিতি সৌদি আরব ও পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে?
তিনি আরো বলেছেন, যে রাতে সাবেক সৌদি রাজা (আবদুল্লাহ) মারা যান সেই রাতেই ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর এক প্রতিনিধি দল সৌদি আরবে গিয়েছিল (শান্তিকামীতা ও বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে); তাই ইয়েমেন সৌদি আরব ও আশপাশের রাজতান্ত্রিক সরকারগুলোর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে-এমন দাবি পুরোপুরি ভিত্তিহীন।
হিজবুল্লাহর প্রধান আরো বলেছেন, ইয়েমেনে চলমান আগ্রাসনে যারাই অংশ নিচ্ছে এবং যারা এ ব্যাপারে সন্তুষ্ট তারা সবাইকে কিয়ামত বা বিচার দিবসে প্রশ্নের জবাব দিতে হবে; আর তারা এই বলে পার পাবেন না যে সৌদি সরকার আগ্রাসনের সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমরাও তার অনুসরণ করেছি।
ইরান ইয়েমেনকে দখল করে ফেলেছে বলেই সৌদি রাজ-সরকার সেখানে সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছে বলে যে অজুহাত দেখাচ্ছে তাকে মিথ্যাচার হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে সৌদি প্রচারণা সামরিক হামলার চেয়েও বেশি বিস্তৃত ও ব্যাপক এবং ইয়েমেনে ইরানি দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- এমন দাবি খুব বড় ধরনের মিথ্যাচার।
হিজবুল্লাহর প্রধান আরো বলেছেন, আসলে সৌদি রাজ-সরকারের সমস্যা হলো তারা ‘জনগণ’ ও ‘জাতিগুলো’ বলতে কিছু বোঝে না বা মানে না; তারা আরব জনগণকে এবং এমনকি সৌদি জাতিকেও (স্বাধীন নাগরিক হিসেবে) স্বীকৃতি দেয় না। #