১. নিজের সিদ্ধান্ত মূল্যহীন ভাবা: যেহেতু অফিসের সবচয়ে কনিষ্ঠ কর্মী, কাজেই আপনার প্রস্তাবনা বা সিদ্ধান্তের মূল্য দেওয়া হবে না- এমন ভাবনা সব তরুণ-তরুণীর মাথায় উঁকি দেয়। কিন্তু এটি বড় ধরনের ভুল চিন্তা। আপনি কী ভাবছেন, কী করতে চাইছেন, কী প্রস্তাব রাখছেন এবং কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ইত্যাদি ক্যারিয়ারের পরের অংশটি গড়ে তুলবে। আপনার কথা বা কাজের যথেষ্ট মূল্য রয়েছে।
২. নেটওয়ার্ক গড়ে তোলায় ব্যর্থতা : ব্যবসা বা চাকরি, ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং খুব বড় বিষয়। সময় হয়নি ভেবে নিয়ে বসে থাকবেন না। বরং এখন থেকেই যদি পেশাক্ষেত্রে পরিচিত মহল গড়ে তুলতে সচেতন হন, তাহলে খুব দ্রুত এগিয়ে যেতে পারবেন।
৩. আত্মকেন্দ্রিক জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করা : জন এফ কেনেডির একটি বিখ্যাত উক্তি হলো- ‘দেশ তোমার জন্য কী করতে পারে, তা জিজ্ঞাসা করো না, বরং তুমি দেশের জন্য কী করতে পারো তা জিজ্ঞাসা করো।’ জীবনবৃত্তান্ত বা রিজ্যুমি তৈরির মূল ধারণা এটাই। আপনি প্রতিষ্ঠানের জন্য কী করতে পারেন তা যেন রিজ্যুমির তথ্য দেখে বোঝা যায়। আপনি কী চাইছেন তা রিজ্যুমিতে তুলে ধরবেন না।
৪. দ্রুত চাকরি ছেড়ে দেওয়া : বর্তমান চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন একটি খুঁজে বের করা দোষের কিছু নয়। তবে কম বয়সে চাকরি শুরু করে দ্রুত ছেড়ে দিলে আপনাকে ধৈর্যহীন কর্মী বলেই মনে করা হবে। এ বয়সী চাকুরে সমস্যার সম্মুখীন হলেই চাকরি ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করেন। খুব দ্রুত এমন সিদ্ধান্ত নেবেন না।
৫. নিজের ওপর বিনিয়োগে ব্যর্থতা : ক্যারিয়ারে আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ আপনি নিজেই। নতুন নতুন পথ খুঁজে নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই আপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। কিন্তু তারচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নিজেকে আরো বেশি গ্রহণযোগ্য করে তোলা। তাই নতুন কোনো কোর্স করা বা নতুন দক্ষতা অর্জন ইত্যাদি কাজে সময় দিন। এসব কাজের মাধ্যমে নিজের ওপর বিনিয়োগ করুন।
৬. নিজেকে সবজান্তা মনে করা : নিজের যোগ্যতা ও সামর্থ্য সম্পর্কে ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়। শিক্ষাজীবনে দারুণ ফলাফল নিয়ে বিশের কোটায় যাঁরা পেশাজীবনে প্রবেশ করেন, তাঁরা অনেক সময়ই নিজেকে সবার চেয়ে জ্ঞানী ও দক্ষ বলে মনে করেন। শিক্ষাজীবন ও পেশাজীবনের পার্থক্য না বোঝার কারণেই এমনটা হয়। কাজেই নতুন পথে নিজেকে আনাড়ি মনে করে শিখতে থাকুন।
৭. জ্যেষ্ঠদের প্রতি সম্মান না থাকা : সদ্য তরুণ কর্মীর আরেকটি সমস্যা হলো- ওপরের পদের মানুষদের হেয় করে দেখা। পড়াশোনায় হয়তো আপনি অনেক সিনিয়রদের চেয়ে ভালো ফলাফল করেছেন। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে একেবারে নতুন। যদি ভেবে থাকেন প্রতিষ্ঠান তার ২০ বছরের পুরনো কর্মীর কথা ফেলে দিয়ে আপনার কথা রাখবে, তবে বড় ভুল করছেন। ওপরের পদে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রাখবেন। কারণ একসময় ওখানেই আপনার স্থান হবে।
৮. লক্ষ্য নির্ধারণে অবহেলা : ক্যারিয়ারের প্রথমেই লক্ষ্য নির্ধারণ না করাটা মারাত্মক ভুলের একটি। কী করতে চান বা কোন দিকে এগোবেন, তা জানা না থাকলে পেশাজীবনে ভাসমান কর্মী হয়েই থাকবেন। লক্ষ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট পথে এগিয়ে নেবে। সময়ের ব্যবধানে একটি করে লক্ষ্য ঠিক করে নিতে পারেন। ক্যারিয়ার শুরুর প্রথম বছরের শেষে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করুন।
৯. যেকোনো চাকরিতে প্রবেশ করা : চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে এই বয়সীদের মানসিকতা এমন থাকে যে চাকরি একটি হলেই হলো। থাকা-খাওয়া চালানোর জন্যও যদি চাকরি জরুরি হয়ে পড়ে, তবুও না জেনে-বুঝে যেকোনো চাকরিতে ঢুকে পড়া উচিত নয়। যতটুকু সম্ভব সময় নিন। স্বল্পমেয়াদে বা দীর্ঘমেয়াদে কি সুবিধা হবে তা ভেবে নিতে হবে।
১০. শুধুই প্রতিযোগিতা : স্কুল-কলেজে সব সহপাঠীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা চলে। কিন্তু পেশায় তা নয়। অন্যের চেয়ে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে তোলায় প্রতিযোগী হতে পারেন। কিন্তু সহকর্মীর মতো বেতন-সুবিধা ইত্যাদি বাড়ানোর প্রতিযোগিতা একমাত্র কাজ হলে, পেশাজীবনের আসল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে ছিটকে পড়বেন। তাই নিজের ভুল বুঝে নিন এবং তা শুধরে নিয়ে দক্ষ হয়ে উঠুন।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.